পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আস্তীকপর্ব্ব।
২০১

আপনার পিতার নিকট পাঠাইয়া দিলেন যে, আমার পুত্র তোমাকে শাপ দিয়াছে, তুমি সাবধান হও, তক্ষক তোমাকে স্বীয় তেজঃ দ্বারা দগ্ধ করিবেক। গৌরমুখ আপনার পিতার নিকট আসিয়া বিশ্রামান্তে আদ্যোপান্ত সমস্ত বৃত্তান্ত নিবেদন করিলেন। আপনার পিতা এই ভয়ঙ্কর বাক্য শ্রবণ করিয়া তক্ষকের ভয়ে অত্যন্ত সাবধান ও সতর্ক হইয়া রহিলেন।

 সপ্তম দিবস উপস্থিত হইলে, ব্রহ্মর্ষি কাশ্যপ সত্বর গমনে আপনকার পিতার নিকট আসিতেছিলেন। তক্ষক তাহাকে দেখিতে পাইয়া জিজ্ঞাসা করিল, হে মহর্ষে। তুমি কোথায় ও কি প্রয়োজনসাধনার্থ এত সত্বর গমন করিতেছ? তিনি কহিলেন, অদ্য তক্ষক রাজা পরীক্ষিৎকে ভস্মাবশেষ করিবেক, আমি তাহার প্রতিকারার্থে যাইতেছি, আমি সমীপে থাকিলে, তক্ষক রাজার প্রাণ বিনাশ করিতে পারিবে না।” তক্ষক কহিল, হে ঋষে! আমি সেই তক্ষক, আমি তাহাকে দংশন করিব। তুমি কি নিমিত্ত তাহাকে বাঁচাইতে বৃথা চেষটা পাইবে? আমি দংশন করিলে তুমি কোনও ক্রমেই রাজাকে বাঁচাইতে পারবে না, তুমি আমার অদ্ভুত বীর্য দেখ। এই বলিয়া তক্ষক এক বৃক্ষকে দংশন করিল। বৃক্ষ তৎক্ষণাৎ ভস্মীভূত হইল। কাশ্যপও তৎক্ষণাৎ সেই বৃক্ষকে পুনর্জীবিত করিলেন। তখন তক্ষক, তুমি কি অভিলাষে যাইতেছ বল, এই বলিয়া তাঁহাকে লোভপ্রদর্শন করিল। কাশ্যপ কহিলেন, আমি ধনলাভপ্রত্যাশায় যাইতেছি। তক্ষক কহিল, তুমি রাজার নিকট যত ধনের প্রত্যাশা কর, আমি তদপেক্ষা অধিক দিতেছি, লইয়া নিবৃত্ত হও। কাশ্যপ তক্ষকের এই বাক্য শ্রবণ করিয়া অভিলানুরূপ অর্থ গ্রহণ পূর্ব্বক স্বস্থানে প্রস্থান করিলেন।