পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০২
মহাভারত।

এই রূপে সেই ব্রাহ্মণ নিবৃত্ত হইলে, তক্ষক ছদ্ম বেশে আপনকার পিতার নিকট আসিয়া স্বীয় দুর্বিষহ বিষছুি দ্বারা তাঁহাকে ভস্মসাৎ করিল। তদনন্তর আপনি রাজ্যে অভিষিক্ত হইয়াছেন। মহারাজ! এই ভয়ঙ্কর ব্যাপার আমরা যেরূপ দেখিয়াছিলাম ও শুনিয়াছিলাম, অবিকল বর্ণন করিলাম, এক্ষণে নিজ পিতার ও মহর্ষি উতঙ্কের পরাভব বিবেচনা করিয়া যাহা কর্ত্তব্য হয়, করুন।

 রাজা জনমেজয়, পিতৃপরাভববৃত্তান্ত শ্রবণ করিয়া অমাত্যদিগকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তক্ষক যে বৃক্ষকে ভস্মসাৎ করিয়াছিল, এবং কাশ্যপ যে সেই ভস্মীভূত বৃক্ষকে পুনর্জীবিত করিয়াছিলেন, এই অদ্ভুত বৃত্তান্ত তোমরা কাহার নিকট শুনিয়াছিলে? বোধ করি, সর্পকুলাধম তক্ষক এই বিবেচনা করিয়াছিল, কাশ্যপ মন্ত্রবলে রাজার প্রাণরক্ষা করিবেক, সন্দেহ। নাই। আমি দংশন করিলে যদি এ ব্রাহ্মণ রাজাকে বাঁচায়, তাহা হইলে আমাকে লোকে উপহাস্পদ হইতে হইবে। এই ভাবিয়াই সে ব্রাহ্মণকে তুষ্ট করিয়া বিদায় করিয়াছিল।সে যাহা হউক, আমি এক্ষণে তাহাকে সমুচিত প্রতিফল দিব। কিন্তু একটি কথা জিজ্ঞাসা করি, তক্ষক ও কাশ্যপের বৃত্তান্ত নির্জন বনে ঘটিয়াছিল, তাহা কে বা দেখিল, কে বা শুনিল, তোমরাই বা কি রূপে অবগত হইলে বল, সবিশেষ শুনিয়া সর্পকুলনিপাতের উপায় বিধান করিব। মন্ত্রিগণ কহিলেন, মহারাজ! তক্ষক ও কাশ্যপের বৃত্তান্ত যে রূপে যে ব্যক্তি আমাদিগকে কহিয়াছিল, তাহা শ্রবণ করুন। কোনও ব্যক্তি কাষ্ঠ অহরণ নিমিত্ত পূর্ব্বেই সেই বৃক্ষে আরোহণ করিয়াছিল। তক্ষক ও কাশ্যপ উভয়েই তাহা জানিতে পারেন