পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আস্তীকপর্ব্ব।
২১৫

কর্ত্তৃক জিজ্ঞাসিত হইয়া কহিলেন, মহারাজ! বিপ্রগণ যাহা কহিতেছেন, তাহা যথার্থ বটে। পুরাণ শাস্ত্রে যেরূপ নির্দিষ্ট আছে, তদনুসারে নিবেদন করিতেছি, দেবরাজ ইন্দ্র তক্ষককে অভয়দান করিয়াছেন; কহিয়াছেন, তুমি আমার নিকটে খাক, অগ্নি তোমাকে দগ্ধ করিতে পারিবেন না।

 সর্পসত্রদীক্ষিত রাজা শুনিয়া সাতিশয় ক্ষুব্ধ হইলেন, এবং হোতাকে কর্ম্ম সমাপন বিষয়ে সত্বর হইবার নিমিত্ত বারংবার কহিতে লাগিলেন। হোতাও মন্ত্রোচ্চারণ পূর্ব্বক তক্ষককে আহ্বান করিতে লাগিলেন। অনন্তর মহানুভাব দেবরাজ বিমানারোহণ পূর্ব্বক নভোমণ্ডলে উপস্থিত হইলেন। জলধরগণ, বিদ্যাধরগণ ও অপ্সরাগণ তাঁহার সমভিব্যাহারে অসিল। দেবগণ তাঁহার চতুর্দ্দিকে দণ্ডায়মান হইয়া স্তব করিতে লাগিলেন। নাগরাজ তক্ষক তাঁহার উত্তরীয় বস্ত্রে বদ্ধ ছিল, সে ভয়ে উদ্বিগ্ন হইয়া অত্যন্ত অসুখে কালহরণ করিতে লাগিল।

 রাজা তক্ষকের প্রাণদণ্ড করিবার নিমিত্ত একান্ত অধ্যবসায়ারূঢ় হইয়াছিলেন, অতএব ক্রোধাবিষ্ট হইয়া পুনর্ব্বার ঋত্বিগ্‌দিগকে কহিলেন, হে বিপ্রগণ! যদি তক্ষক ইন্দ্রের ভবনে থাকে, তবে তাহাকে ইন্দ্রসহিত হুতাশনে পাতিত করুন। হোতা রাজা জনমেজয়ের এইরূপ আদেশ পাইয়া, ইন্দ্রসহিত তক্ষককে উদ্দেশ করিয়া আহুতি প্রদান করিলেন। তিনি এই রূপে আহুতি প্রদান করিলে নভোমগুলে দৃষ্ট হইল, ইন্দ্র ও তক্ষক উভয়ে অত্যন্ত ব্যাকুল হইয়াছেন। তথা হইতে যজ্ঞ দর্শন করিয়া ইন্দ্র যৎপরোনাস্তি ভীত হইলেন, এবং তক্ষককে পরিত্যাগ করিয়া আপন আলয়ে পলায়ন করিলেন।