পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২৮
মহাভারত।

অবস্থায় তাঁহাকে বন্ধ করিয়া গঙ্গাপ্রবাহে প্রক্ষেপ পূর্ব্বক গৃহে আসিয়াছিল। পরে কুন্তীনন্দন জাগরিত হইয়া বাহুবলে বন্ধনচ্ছেন পূর্বক গঙ্গাপ্রবাহ হইতে উত্থান করেন। একদা ভীমকে নিদ্রিত দেখিয়া, দুর্য্যোধন অতি তীক্ষ্ণবিষ কৃষ্ণসর্প দ্বারা তাঁহার সর্বাঙ্গে দংশন করায়, তথাপি তাঁহার প্রাণনাশ হয় নাই।

 এই রূপে দুর্য্যোধন পাণ্ডবদিগের যে সকল নিগ্রহ করিত, মহামতি বিদুর তৎপ্রতীকার ও তৎসমুদায় হইতে তাহাদের রক্ষণবিষয়ে সতত অবহিত ছিলেন। স্বর্গবাসী দেবরাজ ইন্দ্র যেমন জীবলোকের সুখপ্রদ, বিদুর পাণ্ডবদিগের নিয়ত সেইরূপ সুখপ্রদ ছিলেন।

 যখন দুরাত্মা দুর্য্যোধন, কি গুপ্ত কি প্রকাশিত, কোনও উপায়েই পাণ্ডবদিগের বিনাশ করিতে পারিল না, তখন কর্ণ দুঃশাসন প্রভৃতি সচিবগণের সহিত মন্ত্রণা করিয়া এবং ধৃতরাষ্ট্রের অনুজ্ঞা লইয়া জতুগৃহ নির্ম্মাণ করাইল। পুত্রের চিত্তরঞ্জনকারী রাজা ধৃতরাষ্ট্র রাজ্যভোগাভিলাষে পাণ্ডবদিগকে নির্ব্বাসিত করিলেন। তাঁহারা পঞ্চ ভ্রাতা ও জননী ছয় জনে হস্তিনাপুর হইতে প্রস্থান করিলেন। মহাপ্রাজ্ঞ বিদুর মহাশয় প্রস্থানকালে তাঁহাদের মন্ত্রিস্বরূপ হইয়াছিলেন; তাহারই মন্ত্রণাপ্রভাবে তাঁহারা নিশীথ সময়ে জতুগৃহদাহ হইতে মুক্ত হইয়া বন প্রস্থান করিতে পারিয়াছিলেন। পাণ্ডবেরা বারণাবতনগরে উপস্থিত হইয়া জননীসহিত অথায় অবস্থিতি করিতে লাগিলেন। তাঁহারা ধৃতরাষ্ট্রের আদেশানুসারে, অত্যন্ত সাবধান ও সতর্ক হইয়া, জতুগৃহে সংবৎসর বাস করিলেন। অনন্তর বিদুরের উপদেশ ক্রমে প্রথমতঃ সুরঙ্গ প্রস্তুত করিলেন; পরে সেই