পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতসূচনা।
২২৯

জতুগৃহে অগ্নি প্রদান করিয়া এবং দুরাচার পুরোচনকে দগ্ধ করিয়া জননীসহিত গুপ্ত ভাবে পলায়ন করিলেন।

 কিয়ৎ দূর গমন করিয়া পাণ্ডবেরা এক বননির্ঝর সমীপে হিড়িম্বনামক এক মহাভয়ানক রাক্ষস দেখিতে পাইলেন, এবং ঐ রাক্ষসরাজের প্রাণবধ করিয়া প্রকাশভয়ে তথা হইতে পলায়ন করিলেন। ভীমসেন এই স্থলে হিড়িম্বা রাক্ষসীর পাণিগ্রহণ করেন। এই হিড়িম্বার গর্ভে ঘটোৎকচের জন্ম হয়। অনন্তর পাণ্ডবেরা একচক্রানামক নগরীতে উপস্থিত হইলেন, এবং ব্রহ্মচারিবেশ পরিগ্রহ পূর্ব্বক বেদাধ্যয়নরত ও ব্রতপরায়ণ হইয়া, কিছু কাল এক ব্রাহ্মণের আলয়ে অবস্থিতি করিলেন। তথায় এক মহাবল পরাক্রান্ত বকনামক ভয়ানক ক্ষুধার্ত্ত রাক্ষস ছিল; মহাবাহু ভীমসেন তাহার নিকটে গিয়া, নিজ বাহুবীর্য্য প্রভাবে তাহার প্রাণবধ করিয়া, নগরবাসীদিগের ভয় নিরাকরণ ও শোক নিবারণ করিলেন।

 কিয়ৎ দিন পরে পাণ্ডবেরা শ্রবণ করিলেন, পাঞ্চালদেশে দ্রৌপদী নামে এক কন্যা স্বয়ংবরা হইয়াছেন। স্বয়ংবরবৃত্তান্ত শ্রবণ করিয়া তাঁহার তথায় গমন করিলেন, এবং দ্রৌপদী লাভ করিয়া সংবৎসর কাল পাঞ্চালদেশে অবস্থান করিলেন। অনন্তর তাঁহাদিগকে সকলে পাণ্ডব বলিয়া জানিতে পারিতে, পুনর্ব্বার তাঁহারা হস্তিনাপুর প্রত্যাগমন করিলেন।

 রাজা ধৃতরাষ্ট্র ও ভীষ্মদেব পাণ্ডবদিগকে কহিলেন, হে বৎসগণ! কিসে তোমাদিগের ভ্রাতৃবিরোধ না হয়, এই বিষয় বিবেচনা করিয়া আমরা স্থির করিয়াছি, তোমাদিগকে খাণ্ডবপ্রস্থে বাস করিতে হইবেক; অতএব তোমরা খাণ্ডবপ্রস্থ প্রস্থান কর। ঐ নগর পরম রমণীয়, বাসের উপযুক্ত স্থান। তাঁহারা,