পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আদিপর্ব্ব।
১৭

করিয়াছিলেন। মহর্ষি ধৃতরাষ্ট্র, পাণ্ডু, ও বিদুরকে জন্ম দিয়া তপস্যানুরোধে পুনর্ব্বার আশ্রমপ্রবেশ করিলেন। অনন্তর তাঁহারা বৃদ্ধ হইয়া পরম গতি প্রাপ্ত হইলে তিনি নরলোকে ভারত প্রচার করিলেন। পরে সর্পসত্রকালে স্বয়ং রাজা জনমেজয় ও সহস্র সহস্র ব্রাহ্মণ ভারতশ্রবণার্থে ঔৎসুক্য ও আগ্রহাতিশয় প্রকাশ করাতে, সশিষ্য বৈশম্পায়নকে ভারত কীর্ত্তনের আদেশ প্রদান করিলেন। বৈশম্পায়ন সদস্যমণ্ডলমধ্যবর্ত্তী হইয়া দৈনন্দিন কর্ম্মাবসানে ভারত শ্রবণ করাইতে আরম্ভ করিলেন।

 মহর্সি বেদব্যাস ভারতে কুরুবংশের বৃত্তান্ত, গান্ধারীর ধর্ম্মশীলতা, বিদুরের প্রজ্ঞা, কুন্তীর ধৈর্য্য, বাসুদেবের মাহাত্ম্য, পাণ্ডবদিগের সাধুতা, ধার্ত্তরাষ্ট্রদিগের দুর্ব্বৃত্ততা, এই সকল বিষয় বর্ণন করিয়াছেন। প্রথমতঃ তিনি ভারতসংহিতাকে চতুর্বিংশতিসহস্ৰশ্লোকময়ী রচনা করিয়াছিলেন। উপাখ্যানভাগ পরিত্যাগ করিলে ভারতের সংখ্যা ঐরূপ হয়। অনন্তর সংক্ষেপে সর্ব্বার্থসঙ্কলন পূর্ব্বক সার্দ্ধশত শ্লোক দ্বারা অনুক্রমণিকা রচনা করিলেন।

 ব্যাসদেব ভারত রচনা করিয়া সর্ব্বাগ্রে আপন পুত্র শুকদেবকে, তৎপরে শুশ্রূষাপরায়ণ অন্যান্য বুদ্ধিজীবী শিষ্যদিগকে, অধ্যয়ন করাইলেন। অনন্তর ষষ্টিলক্ষশ্লোকময়ী ভারতসংহিতা রচনা করিলেন। তন্মধ্যে দেবলোকে ত্রিংশৎ, পিতৃলোকে পঞ্চদশ, গন্ধর্ব্বলোকে চতুর্দ্দশ, আর নরলোকে এক লক্ষ শ্লোক প্রতিষ্ঠিত


    গার্হপত্য অগ্নি হইতে উদ্ধৃত করিয়া যাহা দক্ষিণ ভাগে স্থাপিত করা যায়, তাহার নাম দক্ষিণাগ্নি। গৃহস্থ ব্যক্তি চির কাল অবিচ্ছেদে যে অগ্নি গৃহে রাখে, তাহার নাম গার্হপত্য। গার্হপত্য হইতে উদ্ধৃত করিয়া হোমার্থ যে অগ্নির সংস্কার করা যায়, তাহার নাম আহবনীয়।