পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতপ্রশংসা।
২৩৫

সম্পাদন করে। দিবসে ইন্দ্রিয় ও মনের দ্বারা জ্ঞানতঃ বা অজ্ঞানতঃ মনুষ্য যে সকল পাপ সঞ্চয় করে, মহাভারত শুনিলেই তাহা নষ্ট হইয়া যায়। ভরতবংশীয়দিগের মহৎ জন্মবিবরণ ইহাতে লিখিত হইয়াছে, এই নিমিত্ত ইহার নাম মহাভারত; যিনি মহাভারত শব্দের এই ব্যুৎপত্তি অবগত হয়েন, তিনি সকল পাপ হইতে মুক্ত হয়েন। এই ভারতে ভরতবংশীয়দিগের বিচিত্র চরিত্র কীর্ত্তিত হইয়াছে, ইহা পাঠ করিলে মনুষ্যেরা মহাপাপ ইইতে মুক্ত হয়। লব্ধকাম মহর্ষি কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ক্রমাগত তিন বৎসর শুচি ও যত্নশীল হইয়া নিয়ম পূর্ব্বক এই ভারত রচনা করিয়াছেন, অতএব ব্রাক্ষণদিগের নিয়মযুক্ত হইয়া ইহা শ্রবণ করা উচিত। এই ব্যাসপ্রোক্ত পবিত্র ভারতকথা যে সকল ব্রাহ্মণ পাঠ করেন, ও যাঁহারা শ্রবণ করেন, তাঁহারা যথেষ্টাচারী হইলেও নিষিদ্ধ কর্ম্মের অনুষ্ঠান ও বিহিত কর্ম্মের অননুষ্ঠান জন্য দোষে লিপ্ত হয়েন না। ধর্ম্মকামনায় আদ্যন্ত এই ইতিহাস শ্রবণ করিলে কামনা সিদ্ধ হয়। এই পরম পবিত্র সর্ব্বোৎকৃষ্ট ইতিহাস শ্রবণে যাদৃশ সুখ ও সন্তোষ লাভ হয়, মনুষ্য স্বর্গলাভেও তাদৃশ সুখ ও সন্তোষের অধিকারী হইতে পারে না। যে সকল পুণ্যশীল লোক এই অদ্ভুত কথা শ্রবণ করেন, এবং শ্রবণ করান, তাঁহাদিগের রাজসূয় ও অশ্বমেধের ফল লাভ হয়। যেমন সমুদ্র ও সুমেরু রত্ননিধি বলিয়া বিখ্যাত, এই ভারতও সেইরূপ রত্ননিধি। এই মহাভারত বেদতুল্য, পবিত্র, উৎকৃষ্ট, শ্রুতিসুখপ্রদ ও শীলবর্দ্ধন। হে রাজন্! যে ব্যক্তি যাচকদিগকে এই ভারত দান করে, তাহার সসাগরা পৃথিবী দান করা হয়। আমি পুণ্য ও বিজয়ের নিমিত্ত সন্তোষ- দায়িনী এই দিব্য মহাভারতকথা বিস্তারিত রূপে কীর্ত্তন