পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
মহাভারত।

 যখন শুনিলাম, অর্জ্জুন বিচিত্র শরাসন সমাকর্ষণ পূর্ব্বক লক্ষ্য বিদ্ধ ও ভূতলে পাতিত করিয়া, সমবেত রাজগণ সমক্ষে দ্রৌপদীরে হরণ করিয়া আনিয়াছে, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, অর্জ্জুন দ্বারকাতে সুভদ্রারে বল পূর্ব্বক হরণ করিয়া বিবাহ করিয়াছে, অথচ বৃষ্ণিকুলাবতংস কৃষ্ণ বলরাম মিত্রভাবে ইন্দ্রপ্রস্থে আগমন করিয়াছেন, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, দেবরাজ ভূরি পরিমাণে বারিবর্ষণ করিতে লাগিলেন, কিন্তু অর্জ্জুন দিব্য শরজাল দ্বারা সেই বারিবর্ষণ নিবারণ করিয়া খাণ্ডবদাহে অগ্নিকে পরিতৃপ্ত করিয়াছে, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, পঞ্চ পাণ্ডব কুন্তীসহিত জতুগৃহ হইতে পরিত্রাণ পাইয়াছে, এবং মহাপ্রাজ্ঞ বিদুর তাহাদের ইষ্টসাধনে যত্নবান হইয়াছে, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, অর্জুন রঙ্গক্ষেত্রে লক্ষ্য ভেদ করিয়া দ্রৌপদী লাভ করিয়াছে, এবং মহাপরাক্রান্ত পাঞ্চাল পাণ্ডব উভয় কুল একত্র হইয়াছে, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, ভীমসেন বাহুবলে অতি তেজস্বী মগধেশ্বর জরাসন্ধের প্রাণবধ করিয়াছে, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, পাণ্ডুতনয়েরা দিগ্বিজয়ে বিনির্গত হইয়া পরাক্রমপ্রভাবে সমস্ত ভূপতিদিগকে বশীভূত করিয়া রাজসূয় মহাযজ্ঞ সম্পন্ন করিয়াছে, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, অশ্রুমুখী, অতিদুঃখিতা, একবস্ত্রা, রজস্বলা, সনাথা দ্রৌপদীকে অনাথার ন্যায় সভায় লইয়া গিয়াছে, তখন আর আমি জয়ের আশা করি নাই। যখন শুনিলাম, ধুর্ত্ত মন্দবুদ্ধি দুঃশাসন সভামধ্যে