পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দ্বিতীয় অধ্যায়—পর্ব্বসংগ্রহ।

ঋষিগণ কহিলেন, হে সূতনন্দন! তুমি যে সমন্তপঞ্চক তীর্থের উল্লেখ করিয়াছ, আমরা তাহার স্বরূপ ও সবিশেষ বিবরণ জানিতে বঞ্ছা করি। উগ্রশ্রবাঃ কহিলেন, হে সাধু ব্রাহ্মণগণ! আমি সমন্তপঞ্চকবৃত্তান্ত ও অন্যান্য নানা শুভ কথা কীর্ত্তন করিতেছি, আপনারা শ্রবণ করুন। সকলশস্ত্রধারিশ্রেষ্ঠ পরশুরাম ত্রেতা ও দ্বাপরের সন্ধিতে পিতৃবধক্রোধে অধীর হইয়া ভূয়ো-ভূয়ঃ ক্ষত্রিয়কুল ধ্বংস করিয়াছিলেন। সেই অনলতুল্য তেজস্বী ঋষি নিজ বীর্য্যে সমস্ত ক্ষত্রিয়কুল উৎসন্ন করিয়া সমন্তপঞ্চকে পঞ্চ রুধিরহ্রদ করেন। আমরা শুনিয়াছি, তিনি ক্রোধে অন্ধ হইয়া সেই সেই রুধিরহ্রদের রুধির দ্বারা পিতৃলোকের তর্পণ করিয়াছিলেন। অনন্তর ঋচীক প্রভৃতি পিতৃগণ তাঁহার নিকটে আসিয়া কহিলেন, হে মহাভাগ রাম! আমরা তোমার এইরূপ পিতৃভক্তি ও বিক্রমাতিশয় দর্শনে সাতিশয় প্রসন্ন হইয়াছি, ইচ্ছানুরূপ বর প্রার্থনা কর। রাম কহিলেন, হে পিতৃগণ! যদি আপনারা আমার প্রতি প্রসন্ন হইয়া থাকেন ও আমাকে অনুগ্রহ করিতে ইচ্ছা করেন, তবে এই বর দেন যে, আমি রোষবশে ক্ষত্রিয়কুল সংহার করিয়া যে পাপ গ্রস্ত হইয়াছি, যেন তাহা হইতে মুক্ত হই, এবং যেন এই সকল হ্রদ তীর্থরূপে ভূমণ্ডলে বিখ্যাত ও পরিগণিত হয়। পিতৃগণ যথাপ্রার্থিত বর প্রদান পূর্ব্বক ক্ষমস্ব বলিয়া তাঁহাকে নিষেধ করিলেন, তখন তিনি প্রতিজ্ঞাত ক্ষত্রিয়কুলসংহারক্রিয়া হইতে বিরত হইলেন।