পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
মহাভারত।

এখন তুমি কি আহার কর? উপম নিবেদন করিলেন, ভগবন্! আমি আপনাকে প্রথম ভিক্ষা সমৰ্পণ করিয়া আর এক বার ভিক্ষা করি, তাহাতে যাহা পাই তাহাই আহার করিয়া প্রাণধারণ করি। উপাধ্যায় কহিলেন, ইহা গুরুকুলবাসীর ধর্ম্ম নহে; তুমি অন্যান্য ভিক্ষাজীবীর বৃত্তি প্রতিরোধ করিতেছ, এৰম্প্রকারে জীবিকানির্বাহ করাতে তোমার লোভিত্ব প্রকাশ পাইতেছে; অতঃপর তুমি দ্বিতীয় বার ভিক্ষা করিও না। এইরূপ অভিহিত হইয়া উপমন্যু পূর্ব্ববৎ গো রক্ষা করিতে লাগিলেন। এক, দিবস তিনি গোরক্ষান্তে উপাধ্যায়গুহে আগমন করিয়া তাঁহার সম্মুখবর্তী হইয়া অভিবাদন করিলেন। উপাধ্যায় এখনও তাহাকে স্কুল দেখিয়া জিজ্ঞাসিলেন, বৎস উপম। আমি তোমার সমুদায় ভিক্ষা গ্রহণ করি, আর তুমি ভিক্ষা কর না, তথাপি তোমাকে বিলক্ষণ স্থূলকায় দেখিতেছি; অতএব, এক্ষণে কি আহার করিয়া থাক, বল। এইরূপ জিজ্ঞাসিত হইয়া উপমন্যু নিবেদন করিলেন, মহাশয়। এই সকল ধেনুর দুগ্ধ পান করিয়া প্রাণধারণ করি। উপাধ্যায় কহিলেন, আমি তোমাকে অনুজ্ঞা প্রদান করি নাই, তোমার এ রূপে দুগ্ধপান করা কোন রূপেই ন্যায্য নহে। উপম, আর এরূপ করিব না বলিয়া, প্রতিজ্ঞা করিলেন, এবং গোরক্ষান্তে থাকলে উপাধ্যায় গৃহে আগমন করিয়া গুরুসম্মুখে দাড়াইয়া প্রণাম করিলেন। উপাধ্যায় এখনও তাঁহাকে স্কুলকলেবর অবলোকন করিয়া কহিলেন, বৎস উপমন্যু! ভিক্ষান্ন ভক্ষণ কর না, বারান্তরও ভিক্ষা কর না, দুগ্ধও পান কর না; তথাপি তোমাকে স্থূলকায় দেখিতেছি। অতএব, এখন কি আহার করিয়া থাক, বল। উপমন্যু এইরূপ আদিষ্ট হইয়া নিবেদন করিলেন, মহাশয়!