পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৮
মহাভারত।

দেবতারা ঐ চক্রে অধিরূঢ় আছেন; তোমরা আমাকে সেই চক্ক হইতে মুক্ত কর, আমি অত্যন্ত বিষাদ প্রাপ্ত হইতেছি। তোমরা পরব্রহ্মস্বরূপ হইয়াও জুড়স্বভাব বিশ্ব প্রপঞ্চ স্বরূপ, তোমরাই কর্ম্ম ও কর্মফল স্বরূপ, আকাশাদি নিখিল জড় পদার্থ তোমাদিগের স্বরূপেই লীন হয়, তোমরাই অবিদ্যাদোষে তত্ত্বজ্ঞানসাধনে পরাসুখ হইয়া ও বিষয়সুখাস্বাদ দ্বারা ইন্দ্রিয়গণকে চরিতার্থ করিয়া সংসারপাশে বদ্ধ হও। তোমর সৃষ্টির প্রাক্কালে দশ দিকু, আকাশমণ্ডল, ও সূর্য্য সৃষ্টি করিয়াছ; ঋষিগণ সেই সূর্য্যকৃত কালানুসারে বেদবিহিত কর্ম্মের অনুষ্ঠান করেন এবং সমুদায় দেবত ও মনুষ্য ঐশ্বর্যভোগ করিতেছেন। তোমরা আকাশাদি সূক্ষ পঞ্চ ভূত সৃষ্টি করিয়া তাহাদিগের পঞ্চীকরণ[১] করিয়াছ, সেই পঞ্চীকৃত ভূতপঞ্চক হইতে নিখিল বিশ্ব সমুদ্ভূত হইয়াছে। জীবগণ ইন্দ্রিয়পরতন্ত্র হইয়া বিষয়াভোগ করিতেছে, এবং সমস্ত দেবতা ও সমস্ত মনুষ্য ভূতল আশ্রয় করিয়া অবস্থিতি করিতেছে। তোমাদিগের, ও তোমরা যে পুষ্করমাল শারণ কর, তাহার বন্দনা করি। নিত্যমুক্ত কর্ম্মফলদাহ অশ্বিনীতনদ্বয়ের সহায়তা ব্যতিরেকে অন্যান্য দেবতারা স্ব স্ব ব্যাপার সম্পাদনে সমর্থ নহেন। হে অশ্বিনীকুমারযুগল! তোমরা অগ্রে মুখ দ্বারা অনুরূপ গর্ভ গ্রহণ কর, পরে অচেতন


  1. প্রথমে আকাশ, বায়ু, অগ্নি, জল, পৃথিবী, এই সূক্ষ্ম পঞ্চ ভূত উৎপন্ন হয়। পরে স্কুল সৃষ্টি সম্পাদনার্থে ঐ পঞ্চ ভূতকে ভাগদ্বয়ে বিভক্ত করিয়া প্রত্যেকের এক এক অর্দ্ধকে চারি খণ্ডে বিভক্ত করিয়া স্বীয় অর্ক ব্যতিরেকে অন্য চারি অর্ধে এক এক খণ্ড ‘যোজিত করা যায়। ইহাকেই পঞ্চীকরণ কহে।