পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
মহাভারত।

বিলম্ব হইল কেন? উতঙ্ক কহিলেন, মহাশয় নাগরাজ তক্ষক কুণ্ডলাহরণ বিষয়ে বিষম বিঘ্ন ঘটাইয়াছিল, তন্নিমিত্ত নাগলোকে | গিয়াছিলাম। তয় দেখিলাম, দুই স্ত্রী তন্ত্রে বসিয়া বস্ত্র বয়ন করিতেছে, সেই তন্ত্রের সূত্র সকল শুক্ল ও কৃষ্ণবর্ণ; আপনাকে জিজ্ঞাসা করি সে কি? আর দ্বাদশ অর বিশিষ্ট এক চক্র দেখিলাম, ছয় কুমার ঐ চক্রকে পৱির্ত্তিত করিতেছে, সেই বা কি? আর এক পুরুষ ও মহাকায় এক অশ্য দেখিলাম, তাহারাই বা কে? আর গমনকালে এক বৃষ দর্শন করিয়াছিলাম, ঐ বৃষে এক পুরুষ আরোহণ করিয়াছিলেন, তিনি সানুনয় বচনে কহিলেন, উতঙ্ক! এই বৃষের পুরীষ ভক্ষণ কর, তোমার উপাধ্যায়ও পূর্বে ভক্ষণ করিয়াছিলেন। পরে আমি তাঁহার কথানুসারে সেই বৃভের পুরী ভক্ষণ করিলাম, তিনিই বা কে? আমি আপনার নিকট এই সমস্ত বিষয়ের সবিশেষ বৃত্তান্ত শুনিতে বাসনা করি।

 উতঙ্কের এইরূপ জিজ্ঞাসা বাক্য শ্রবণ করিয়া উপাধ্যায়। কহিলেন, বৎস! যে দুই স্ত্রী দেখিয়াছি, তাঁহারা জীব ও ঈশ্বর; হরি শুক্ল ও কৃষ্ণ বর্ণ সূত্র সকল রাত্রি ও দিবা; যে দ্বাদশ অর বিশিষ্ট চক্র ছয় কুমারে পরিবর্তিত করিতেছেন, সে চক্র সংবৎসর, ছয় কুমারের ছয় ঋতু; যে পুরুষ দেখিয়াছ, তিনি ইন্দ্র; যে আশ্ব, তিনি অগ্নি। আর পথে যাইবার সময় যে বৃষ দেখিয়াছিলে, তিনি করিরাজ ঐরাবত; যে পুরুষ তদুপরি হারূঢ় ছিলেন, তিনি ইন্দ্র; আর সেই বৃষের যে পুরীষ ভক্ষণ করিয়াছ, তাহা অমৃত; উহা ভক্ষণ করিয়াছিল, তাহাতেই তুমি নাগলোকে রক্ষা পাইয়াছ। ভগবান্ ইন্দ্র আমার সখা, তোমার ক্লেশ দর্শনে অনুকম্পাপরবশ হইয়া তোমাকে এই অনুগ্রহ