পাতা:মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র - জগদীশচন্দ্র ভট্টাচার্য্য.pdf/১৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহারাজা শুর মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দী Q করিয়াছিলেন এবং রণচীতে ব্ৰহ্মচৰ্য্য বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। যখন শিক্ষাবিস্তারে তাহার এই কাৰ্য্য স্মরণ করা যায়, তখন মনে হয় তিনি ব্যক্তি হিসাবে শিক্ষাবিস্তারের সহায় হয়েন নাই—পরন্তু স্বয়ং একটি বিরাট প্রতিষ্ঠান ছিলেন। গোমুখীর মুখ হইতে জাহ্নবীর ধারা প্রবাহিত হইয়া যেমন সমগ্ৰ দেশকে উর্বর ও পবিত্র করে, তাহার দয়া হইতে প্রবাহিত সাহায্যধারা তেমনই সমগ্র বঙ্গদেশে শিক্ষাবিস্তার কার্য্য করিত। কোন দেশে—কোনকালে এমন দৃষ্টান্ত দেখা গিয়াছে বলিয়া মনে হয় না। এই অসাধারণ কীৰ্ত্তির সম্মুখে ইতিহাস যেন স্তম্ভিত— শ্রদ্ধায় অবনত—নিৰ্ব্বাক হইয়া দাড়ায় । সমগ্র জগতে এই কীৰ্ত্তির তুলনা মিলে না। দেশের লোককে শিক্ষিত করা যেমন মণীন্দ্রচন্দ্রের জীবনের ব্রত ছিল দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠার পথ মুক্ত করিয়া দেশের লোককে দারিদ্র্য সমস্ত সমাধানে সাহায্য করাও তেমনই র্তাহার ঈপ্সিত ছিল। সে জন্ত তিনি যথেষ্ট ক্ষতি অকাতরে সহ্য করিয়া গিয়াছেন। তিনি বহু শিক্ষার্থীকে বিলাতে, জাপানে, মার্কিনে, জাৰ্ম্মানীতে পাঠাইয়া শিল্প কৌশল অবগত করাইয়াছিলেন । বেঙ্গল পটারিজ, রাজ গা পাথরের কারখানা, চায়না ক্লের কারখানা, বহরমপুর ট্যান্তারী, তেলের কল, দেশলাইয়ের কল এসব তাহারই উদ্যোগে ও সাহায্যে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। তিনি যদি তাহার বিপুল সম্পত্তি দেশের কল্যাণ সাধন জন্ত ন্যাস বলিয়া বিবেচনা না করিতেন, ভবে কখনই তাহার দ্বারা এই সব কাৰ্য্য সম্পাদন সম্ভব হইত না । কেন না, বিষয়ীর দিক হইতে দেখিলে তাহার দান ও ত্যাগ যে মহত্বের পরিচায়ক তাহার অঙ্কুশীলন দেবোচিত হইলেও সংসারী মানবের পক্ষে সমীচীন নহে। একবার তিনি র্তাহার কোন ধনী বন্ধুর সহিত দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠার কথা আলোচনা করিতেছিলেন।