পাতা:মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র - জগদীশচন্দ্র ভট্টাচার্য্য.pdf/১৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহারাজা স্তর মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দী ●》 কিন্তু সারল না ক্রমশঃ বাড়তে লাগল।– দেরাদুন, মশুরি যাওয়ার কথা ছিল তা আর হ’ল না —এই বিপদের মধ্যে প্ৰহলাদ চাকরের হল কলেরা । গভর্ণমেণ্টের স্বাস্থ্যপরিদর্শক মহারাজকে দেখেছিলেন। তিনি প্ৰহলাদকে হাসপাতালে পাঠাতে চাইলেন- মহারাজা কিছুতেই তাতে মত দিলেন না। অবশেষে মহারাজা যখন জরে প্রায় অচৈতন্য—সেই সুযোগ নিয়ে প্ৰহলাদকে হাসপাতালে পাঠান হল ;– জ্ঞান হতেই তার কথা জিজ্ঞাসা করলেন—ধীরে ধীরে সব কথা বুঝিয়ে বলে - ডাক্তার: বাবুর উপরই বেশীর ভাগ দোষ চাপিয়ে দিয়ে সে যাত্রা নিস্কৃতি পাওয়! গেল । প্রায় তিন দিন এইভাবে কাটল— । কি যে উদ্বেগ, কি যে আশঙ্কা কি যে মনের উৎকণ্ঠার মধ্যে ক’টা দিন কাটাতে হয়েছিল সে কথা আজ ভাবলেও বুক কেঁপে ওঠে। মাঝে মাঝে বহুক্ষণ ধরে মহারাজার কাছে বসে থাকতাম-ঘুমুচ্ছেন দেখলে—পাশের ঘরে এসে আমি আর হেমস্তদা মুখোমুখী হয়ে চুপটিকরে বসে থাকতাম। কারো মুখে কথা নাই— বেণী সব সময়েই প্রায় আমোদে কাটতি, জটিলার সঙ্গে খুনমুড়ি করত, —তারাও বিমৰ্ষভাবে আছে—চাকর বাকর সবাই যেন কেমন একটা অভিভূত অবস্থায় চলাফেরা করছে । তখনও হরিদ্ধারে ভীড় যথেষ্ট— পুণ্য সঞ্চয় করে অগণিত পথযাত্রী কেবল সংসার-গৃহে ফিরতে আরম্ভ, করেছে মাত্র – পথে কোলাহলের অস্ত নেই –কিন্তু তারই মধ্যে অবস্থিত আমাদের বাঙ্গলো খানার উপর কে যেন নিস্তব্ধতার যবনিকা টেনে দিয়েছে। তেমনি সেদিন অনুভব করেছিলাম—মহারাজারমহাপ্রস্থানের রাত্রিতে। সারকুলার রোডের সমস্ত বাড়ী খানা যেন কোন মায়াবিনী নিষ্ঠুরা রাক্ষসী তার বিস্তৃত ডানা দিয়ে অন্ধকার করে, রেখেছিল-কথা কইবার প্রবৃত্তি নাই—সে শক্তিও যেন সেদিন