পাতা:মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র - জগদীশচন্দ্র ভট্টাচার্য্য.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૨ মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র দেশের সর্বব শ্রেষ্ঠ গৌরব রূপে নিখিল হৃদয় সিংহাসনে বিরাজ করিবেন। কেবলমাত্র দান ধ্যানই নহে, কেবলমাত্র পরহিত ব্রতই নহে ; শাসন সংরক্ষণ এবং রাজ্য পরিচালনাতেও তিনি যে অপূর্ব বুদ্ধিমত্ত, তেজস্বিতা এবং সূক্ষ্মদৰ্শিতার পরিচয় দান করিয়া গিয়াছেন, তাহার তুলনাও অতি বিরল। শুনা যায় নদীয়ার মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়, শেঠ জগৎ শেঠ প্রমুখ বাংলার সমস্ত জমীদারগণ ও সন্ত্রান্ত শ্রেষ্ঠ ওমরাহগণ যখন বঙ্গেশ্বর তরুণ সিরাজের বিরুদ্ধে হীন ষড়যন্ত্র করিতেছিলেন এবং পুণ্যশ্লোকা মহারাণী ভবানীকে এই ঘৃণিত ষড়যন্ত্র সমর্থন করিবার জন্ত আহবান করিয়াছিলেন তখন তিনি নিভীকভাবে ও সম্পূর্ণ অকুষ্ঠিতচিত্তে মিলিত শক্তির এই হীন কাৰ্য্যপ্রণালীর তীব্র প্রতিবাদ করিয়া ষড়যন্ত্র কার্য্যে পরিণত করায় বাধা দান করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন । বাংলা দেশের তুর্ভাগ্য র্তাহার এই চেষ্টা ফলবতী হয় নাই । র্তাহার এই মহান প্রচেষ্টা কাৰ্য্যকরী হইলে বাংলার ইতিহাসের সহিত তাহার পাতায় পাতায় এই ঘৃণিত ষড়যন্ত্রের কালিমালিপ্ত কলঙ্ককাহিনী বিজড়িত থাকিত না । সামান্ত পর্ণকুটীরে জন্মগ্রহণ করিয়া, দারিদ্র্যের শাকান্ন ভোজন এবং দারিদ্রের আবেষ্টনীর মধ্যে বসবাস, পরদুঃখের নগ্ন চিত্র দর্শন—বাল্য জীবনের এই সকল মৰ্ম্মদাহী অভিজ্ঞতা হইতে উত্তরকালে তিনি মানব জীবন ও মানব দুঃখ সম্বন্ধে যে কিরূপ জাগ্রত হইয়াছিলেন তাহা ভাবিলে বাস্তবিকই বিস্ময়ে স্তম্ভিত হইতে হয়।