পাতা:মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র - জগদীশচন্দ্র ভট্টাচার্য্য.pdf/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Urs মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র পোষাক রাখিবার ভার পাইয়া পরাণ হয়ত কোন বিশেষ প্রয়োজনীয় কাজে তৎক্ষণাৎ মহারাজার আদেশানুযায়ী কাৰ্য্য করিতে পারে নাই। পরে তাড়াতাড়ি করিতে যাইয়া পরাণের অনবধানত বশতঃ এই বহুমূল্য মনোরম পরিচ্ছদে খানিকটা কাল কালী লাগিয়া যায়। পরাণ এই ব্যাপারে নিতান্ত ভীত হইয়া প্রথমে মহারাজার নিকট হইতে এই ব্যাপার গোপন রাখিতে চেষ্টা করে । কিন্তু দৈবাৎ উহা মহারাজার নিকট ধরা পড়িয়া যায়। পরাণ মহাভয়ে দাড়াইয়া কঁাপিতেছিল। মহারাজা কিছুক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া ঈষৎ উচ্চকণ্ঠে বলিলেন – “পরাণ তুই বুঝতে পাচ্ছিস না যে আমার কি সৰ্ব্বনাশ তুই কল্লি। আর এখন এমন সময়ও নেই যে আমি আর একটা পোষাক তৈরী করাই । কি বলব, তোর অবস্থা ভাল নয় নৈলে এর শাস্তি আমি তোকে দিতুম।” এত বড় ভয়ানক অনিষ্টের জন্ত মহারাজা অসাবধান ভৃত্যকে শুধু এই তিরস্কারটুকু করিয়াই ক্ষান্ত হইলেন না ; উত্তরকালে পরাণের পুত্র এবং জামাতার উচ্চশিক্ষা সম্পূর্ণ করাইয়া এবং সংসারে তাহাদিগকে সুব্যবস্থিত করাইয়া পরাণের অসাবধানতার শাস্তি দিয়াছিলেন । এই মহানুভবতা, এই আশ্ৰিতবৎসলতা সাধারণ মানুষের মধ্যে সম্ভব নহে। এই পরদুঃখ কাতরতা, পরের জন্য বেদনামুভব, ইহারই জন্য উচ্চ, নীচ, নিধন সকলে নিবির্বশেষে মহারাজাকে ভক্তিশ্রদ্ধা করিত !