পাতা:মহারাজ রাজবল্লভ সেন ও তৎসমকালবর্ত্তী বাঙ্গলার ইতিহাসের স্থূল স্থূল বিবরণ.djvu/১৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( ১৯২ ) এক্ষণে মীরণের বয়ঃক্রম বিংশবর্ষ মাত্র। এই যুবক সাতিশয় নিষ্ঠুর, লম্পট ও দুৰ্ব্বিনীত ছিলেন। সাহজাহানাবাদ হইতে বহুংখ্যক চরিত্রহীন ও উচ্ছম্বল-প্রকৃতি যুবক মুরশিদাবাদে আসিয়া মীরণের সহিত মিলিত হইল। শাসন সংক্রান্ত ক্ষমতা হস্তগত করিয়া তিনি নিরতিশয় উদ্ধত হইয়া উঠিলেন। কেহ কোন সদুপদেশ প্রদান করিলে তিনি তাহাতে কর্ণপাত করা স্বীয় পদগৌরবের হানিজনক বলিয়া মনে করিতেন। সিরাজের জীবন সংহার করিয়া এই দুৰ্ব্বত্তের শোণিত-পিপাসা এত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হইয়াছিল যে, কাহারও প্রতি সন্দেহ উপস্থিত হইলেই সেই ব্যক্তি অবিলম্বে যমালয়ে প্রেরিত হইত। মীরণ সৰ্ব্বদা একখানি স্মৃতিলিপি রক্ষা করিতেন ; যাহাদের উপর সন্দেহ হইত, তাহাদের নাম ধাম ঐ স্মৃতিলিপিতে লিখিত থাকিত। উপযুক্ত সময় উপস্থিত হইলে, তিনি তাহাদিগকে ক্রমে ইহ জগৎ হইতে অপসারিত করিয়৷ শোণিত-পিপাসা নিবৃত্তি করিতেন (২) । দুল্লভরাম সৰ্ব্বপ্রধান রাজকৰ্ম্মচারী ছিলেন। গ্রন্থকার (রাজবল্লভের জীবনী-লেখক) দুল্লভরামের পদে রাজবল্লভকে বসাইতে চেষ্টা করিয়াছেন। সায়র মোতাক্ষরীণের লিখিত বৃত্তান্ত পাঠে অবগত হওয়া যায় যে, রাজবল্লভ মীরণের দেওয়ান হইয়াছিলেন। অৰ্ম্মি-কৃতি ইতিহাস হইতে উদ্ধত করিয়া দেখাইব যে, মীরজাফরের সিংহাসন লাভ করিবার অল্পকাল পরেই মহারাজ রায়দুল্লভ কায্য হইতে অপসারিত হন এবং ঐ সময় ঢাকা বিভাগের ভার পুনরায় রাজবল্লভের প্রতি অর্পিত হয়। মীরজাফরের সময় বাঙ্গালার শাসনকার্যা পুত্র মীরণের দ্বারা নির্বাহিত হইত। এ অবস্থায় তাহার প্রধান সচিব রাজবল্লুত যে ঐ সময়ের সর্বপ্রধান রাজপুরুষ ছিলেন, তদ্বিষয়ে সন্দেহ করিবার কারণ নাই। এখন জিজ্ঞাস্য, একদিকে কৈলাস বাবুর উক্তি, অন্ততঃ সায়র মোতাক্ষরীণ ও অগ্নি-কৃত ইতিহাস, এতদুভয়ের মধ্যে কোনটি অধিকতর বিশ্বাস যোগ্য ? (R) English Translation of Sair Motakharin, by Haji Mostapha, Vol. II. pages 241 & 271.