পাতা:মহুয়া-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

প্রত্যাগত

দূরে গিয়েছিলে চলি’; বসন্তের আনন্দ ভাণ্ডার
তখনো হয়নি নিঃস্ব; আমার বরণ পুষ্পহার
তখনো অম্লান ছিল ললাটে তোমার। হে অধীর,
কোন্ অলিখিত লিপি দক্ষিণের উদ্ভ্রান্ত সমীর
এনেছিলো চিত্তে তব। তুমি গেলে বাঁশি ল’য়ে হাতে,
ফিরে দেখোনাই চেয়ে আমি ব’সে আপন বীণাতে
বাঁধিতেছিলাম সুর গুঞ্জরিয়া বসন্ত পঞ্চমে;
আমার অঙ্গনতলে আলো আর ছায়ার সঙ্গমে
কম্পমান আম্রতরু ক’রেছিলো চাঞ্চল্য বিস্তার
সৌরভ বিহ্বল শুক্লরাতে। সেই কুঞ্জ গৃহদ্বার
এতকাল মুক্ত ছিল। প্রতিদিন মোর দেহলিতে
আঁকিয়াছে আলিপনা। প্রতি সন্ধ্যা বরণডালিতে
গন্ধ তৈলে জ্বালায়েছি দীপ। আজি কতকাল পরে
যাত্রা তব হ’লো অবসান। হেথা ফিরিবার তরে
হেথা হ’তে গিয়েছিলে। হে পথিক, ছিল এ-লিখন
আমারে আড়াল ক’রে আমারে করিবে অন্বেষণ;
সুদূরের পথ দিয়ে নিকটেরে লাভ করিবারে
আহ্বান লভিয়াছিলে সখা। আমার প্রাঙ্গণ দ্বারে
যে-পথ করিলে সুরু সে-পথের এখানেই শেষ।

১৪৮