পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/২৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミ○8 জীবন চরিত । র্তাহার উপর তাদৃশ প্রসারিত হয় নাই। কিন্তু অরুণ যেমন সূৰ্য্যের আবিৰ্ভাৰ সূচনা করে, তিনিও তেমনই বঙ্গ-সাহিত্যে মধুসূদনের ন্যায় একজন যুগ-প্ৰবৰ্ত্তক কবির আবির্ভাব সুচনা করিয়াছিলেন। তাহার “পদ্মিনীউপাখ্যান”, “কৰ্ম্মদেবী” প্ৰভৃতি গ্ৰন্থ প্ৰাচীন ও নব্য রীতির সংমিশ্রণে রচিত কাব্যের অত্যুৎকৃষ্ট নিদর্শন। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের শেষ বয়সের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কবিতা, রঙ্গলাল বাবুর “পদ্মিনী-উপাখ্যান” এবং তাহার পর মধুসূদনের গ্রন্থাবলী যিনি মনোযোগের সহিত পাঠ করিবেন, তিনি বুঝিতে পরিবেন যে, জীব-জগতে, যেমন, ক্রমপরিণতি অনুসারে, উচ্চ হইতে উচ্চতর জীবের আবির্ভাব হয়, মানসিক জগতের বিকাশক্ষেত্ৰ সাহিত্যেও, তেমনই, শ্রেষ্ঠ হইতে শ্রেষ্ঠতর কাবা, ইতিহাস বা দৰ্শন-শাস্ত্ৰ উদ্ভূত হইয়া থাকে। মধুসূদনের অব্যবহিত পুর্বে বঙ্গীয় সাহিত্যের অবস্থা কিরূপ ছিল, এবং বঙ্গের শিক্ষিত সমাজ, তাহার ন্যায়। একজন কবির আবির্ভাবের জন্য, কিরূপ প্ৰস্তুত ছিলেন, আমরা তাহার বিবরণ প্ৰদান করিয়াছি । স্বদেশের কল্যাণজনক অন্যান্য অনুষ্ঠানের ন্যায়, স্বদেশীয় সাহিত্যেরও সমৃদ্ধিসাধন করিয়া, র্যাহারা জাতীয় জীবন-প্ৰতিষ্ঠার সহায়তা করেন, র্তাহাদিগের ব্ৰত অতি মহৎ । এই মহাব্ৰত সম্পাদনের জন্যই বিধাতা, মধুসুদনকে উপযুক্ত সময়ে, মান্দ্ৰাজ হইতে বঙ্গদেশে প্রেরণ করিয়াছিলেন। প্রকৃতি র্তাহাকে কিরূপ প্ৰতিভা ও শক্তি দান করিয়াছিলেন, নিজের শক্তির ও সামর্থ্যের উপর তাহার কিরূপ দৃঢ় বিশ্বাস ছিল এবং স্বদেশীয় সাহিত্যের সেবায় জীবন উৎসর্গ করিবার জন্য তিনি কিরূপ প্ৰস্তুঠ\হইয়াছিলেন, আমরা পূৰ্ব্বে সে সকল কথার আলোচনা করিয়াছি । মাদ্রাজে। তাহার বাসনা পূর্ণ হইবার সুযোগ ছিল না। কলিকাতায় উপস্থিত হইবার পর তিনি, কিরূপে, সেই সুযোগ প্ৰাপ্ত হইলেন, এইবার|আমরা তাহার আলোচনায় প্ৰবৃত্ত হইব।