পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/২৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শৰ্ম্মিষ্ঠা ও পদ্মাবতী রচনা । R'98 বধের কবিরই উপযুক্ত হইয়াছে। শৰ্ম্মিষ্ঠার ও দেবযানীর বিবাদে শৰ্ম্মিষ্টাকে কলহকারিণী বলিয়া আমাদিগের যে ঘুণ জন্মিবার সম্ভাবনা, এই কথোপকথনে কবি তাঁহা সম্পূর্ণরূপে অপনোদন করিয়াছেন। এ সংসারে ভ্ৰম, প্ৰমাদ না করে কে ? কিন্তু যে অপরাধের পর অনুতাপ করে এবং ভবিষ্যতের জন্য সাবধান হয়, সে আর আমাদিগের ঘূণার পাত্রী নয়,সহানুভূতিরই পাত্রী। শৰ্ম্মিষ্ঠাকে আমরা যখন শুক্রাচাৰ্য্যের তপোবনে দেখতে পাই, শৰ্ম্মিষ্ঠ৷ তখন আর সৌভাগ্য-গর্বিতা রাজদুহিতা নয় ; দৰ্পহারী বিধাতার বিধানে শৰ্ম্মিষ্ঠার দর্পচূৰ্ণ হইয়াছে। শৰ্ম্মিষ্ঠ৷ তখন দাসী এবং সহিষ্ণুতায় ও ধৈৰ্য্যে শৰ্ম্মিষ্ঠ৷ তখন তপস্বিনী। পরাধীনতায় ও বনবাসক্লেশ শৰ্ম্মিষ্ঠার আর সে পূর্বের রূপ লাবণ্য ছিল না। “নিৰ্ম্মল সলিলে যে পদ্ম বিকশিত হয়, পঙ্কিল জলে নিক্ষেপ করিলে, তাহার। আর সে শোভা থাকিবে কেন ?” প্ৰতিদ্বন্দ্বনীর পদসেবা। তখন শৰ্ম্মিষ্ঠার ব্ৰত হইয়াছিল। পরাধীনতায় অনভ্যাস্তা, স্বেচ্ছাবিহারিণী তুরগী দাসীত্ব ক্লেশে শীর্ণ হইয়া গিয়াছিল। কিন্তু শৰ্ম্মিষ্ঠা, সে অবস্থায় যতদূর সন্তুষ্ট থাকা সম্ভব, ততদূর পরিতুষ্টা । শৰ্ম্মিষ্ঠা আত্মকৃত কাৰ্য্যের জন্য অনুতপ্ত ; শৰ্ম্মিষ্ঠার জগতে কাহার ও প্ৰতি দ্বেষ বা বিরাগ নাই । যে দেবযানী শৰ্ম্মিষ্ঠার সাৰ্ব্বনাশের কারণ, তাহার ও উপর শৰ্ম্মিষ্ঠা অসুয়াশূন্য। শৰ্ম্মিষ্ঠার সখী বিধাতার উপর সমস্ত দোষ অৰ্পণ করিতে চাহিলে, শৰ্ম্মিষ্ঠা তাহাকে বুঝাইয়া বলিয়াছিল ; সখি,- “তুমি বিধাতাকে আমার জন্য দোষ দাও কেন। বিধাতার * । * দোষ কি ? গুরুকন্যা দেবযানীর সঙ্গে, আমায় বিবাদ বিসম্বাদ না হলে তা আমাকে এ দুৰ্গতি ভোগ করিতে হতোনা । পিতা আমার দৈত্যরাজ * * তার বিক্রমে দেবগণও সশঙ্কিত। আমি তার প্রিয়তমা কন্যা। আমি আপন দোষেই এ দুর্দশায় পতিত হয়েছি। আমি আপনি মিষ্টা সুন্নার সহিত মিশ্রিত করে বিষ ভক্ষণ করেছি, তার অন্যের দোষ কি ? অনুতপ্ত শৰ্ম্মিষ্ঠার অতি সুন্দর চিত্রই হইয়াছে। এই শৰ্ম্মিষ্ঠা