পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/৪২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

970 জীবন-চরিত ! অত্যাচায়ী রাক্ষসবংশের প্রতি এরূপ অনুকম্প আৰ্য রামায়ণের সীতাপ্ৰকৃতিতে লক্ষিত হয় না ; ইহা মধুসূদনেরই কল্পিত। মেঘনাদবধের সীতা ও সারমার কথোপকথন সাধারণ পাঠকের নিকট প্রায়ই উপেক্ষিত হইয়া থাকে ; কিন্তু ইহা মেঘনাদবধের একটি অত্যুৎকৃষ্ট অংশ। যে দেবীর অনুপম চরিত্র - অবলম্বন করিয়া রচিত বলিয়াই রামায়ণের এত গৌরব, মেঘনাদবধে তাহার কথা না থাকিলে ইহা অঙ্গহীন থাকিত । সীতাদেবীর সে অবস্থায় তাহার সম্বন্ধে অধিক কথা বলা মধুসূদনের পক্ষে সম্ভবপর ছিল না। সীতাদেবী তখন কারাগারের বন্দিনী ; কিন্তু সে আবস্থাতেও মধুসুদন তাহার প্রকৃতিতে যে সকল গুণের সমাবেশ করিয়াছেন, তাহা অতীব সুন্দর হইয়াছে । মেঘনাদবধে রামচন্দ্রের ও লক্ষ্মণের চরিত্র মধুসূদনের হস্তে সুচিত্রিত হয় নাই। কিন্তু ঊর্তাহার সীতাচরিত্র তাহার কাব্যের গৌরব রক্ষা করিয়াছে। যাহারা মনে করেন যে, মধুসুদন, প্ৰকৃত মহত্ত্ব অনুভবে অক্ষম ছিলেন বলিয়াই, রামচন্দ্র ও লক্ষ্মণকে ওরূপ ভাবে চিত্ৰিত করিয়াছেন, তাঁহাদের কথা সম্পূর্ণ সত্য নহে। সত্য হইলে আমরা মেঘনাদবধের সীতা এবং বীরাঙ্গনার রুক্মিণী দেবীকে দর্শন করিতে পাইতাম না । পঞ্চম সৰ্গ-মেঘনাদবধের পঞ্চম সর্গের দৃশ্য স্বৰ্গ ও পৃথিবী উভয় স্থলেই সন্নিবিষ্ট হইয়াছে । মায়াদেবীর কৌশলে লক্ষ্মণ স্বপ্ন দেখিলেন যে, তাহার জননী সুমিত্ৰাদেবী, তাহার শিরোদেশে আবিভূতি হইয়া, তাহাকে লঙ্কার উত্তর দিকৃস্থিত মন্দিরে বর্তমান লঙ্কাপুরীর অধিষ্ঠাত্রী, দেবী মহামায়ার পূজার জন্য, আদেশ দান করিতেছেন। মাতৃবৎসল বীর, জাগ্রত হইয়া, জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার ও সুহৃদ বিভীষণের অনুমতি গ্ৰহণ পূর্বক, দেবীপুজার জন্য প্ৰস্থান করিলেন। দেবানুগ্রহ লাভ করিতে হইলে বহু বিঘ্ন অতিক্রম করিতে să (M-ai " তয়, সকল সমাজেই এ বিশ্বাস বদ্ধমূল ॥৭