পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাল্য-জীবন । Y (t মহদ্বাংশে জন্মগ্রহণ করিলে যে মহাদভিলাষ মনুষ্যের হৃদয়ে, স্বভাবতঃ, উদিত হইয়া থাকে, জাকুবী দাসী মেধাবী পুত্রের হৃদয়ে তাহ বদ্ধমূল করিবার জন্য সৰ্ব্বদা চেষ্টা করিতেন। মধুসূদনেব। পিতাও তাঁহার সম ‘সাময়িকদিগের মধ্যে একজন প্ৰতিষ্ঠাবান ব্যবহারাজীব ছিলেন । পিতার সন্ত্রম ও কৃতিত্ত্ব বালক মধুসুদনকে মহত্ত্বলাভে প্রণোদিত করিত। সেই জন্য লেখাপড়া সম্বন্ধে তাহাকে, কোন দিন, কাহারও তাড়না করিতে হয় নাই । নিজের উচ্চাভিলাষ ও আন্তরিক বিদ্যানুরাগ গুণেই তিনি বঙ্গদেশের একজন অগ্রগণা বিদ্বান তইয়াছিলেন । কি পঠদ্দশাব্য, কি শিক্ষকতা কাৰ্য্যের সময়, কি বাৰিষ্টারাবস্থায়, কখনই মধুসূদন বিদ্যোপার্জন সম্বন্ধে অযত্ন প্ৰকাশ করেন নাই। ছাত্রাবস্থায় হিন্দু কলেজে থাকিতে তিনি যেমন যত্ন সহকারে গ্রন্থাভাস করিতেন,মান্দ্ৰাজে শিক্ষকতা কাৰ্য্য করিবার সময়েও তেমনই করিতেন । মান্দ্ৰাজে থাকিতে তেলেগু, তামিল, হিব্রু ও সংস্কৃত ভাষা এবং ফ্রান্সে থাকিতে ফরাসীস, জৰ্ম্মাণ ও ইতালীয় প্রভৃতি ভাষা শিক্ষাব্য জন্য তিনি দেহ, মন নিযোজিত করিয়াছিলেন । কলিকাতার আসিয়াটিক সোসাইটির পুস্তকালয় এবং লণ্ডনের ব্রিটিস মিউজিয়াম, যখনই যেখানে সুবিধা পাইয়াছিলেন, তখনই সেখান হইতে গ্ৰন্থরাশি আনাইয়া নিজের জ্ঞান-পিপাসা পবিতৃপ্ত করিয়াছিলেন । রোগ, দরিদ্রতা, পারিবারিক অশান্তি প্ৰভৃতি যে সকল বিস্ত্র মনুষের জ্ঞানলালসা বিশুষ্ক করিয়া দেয়, মধুসূদনের জীবনে তাহার কোনটিরই অভাব ছিল না ; কিন্তু নিতাপ্ৰবহনশীল উৎসের ন্যায় তাহার জ্ঞানার্জনস্পৃহা, সংসারের কঠোর নিদাঘতাপের মধ্যেও, তাহার হৃদয় হইতে নিরন্তর নিসৃত হইত। এই জ্ঞানার্জনস্পৃহা এবং কাবানুরক্তি সম্বন্ধে তিনি তঁহার কোন সম্রান্ত বন্ধুকে এইরূপ লিখিয়াছিলেন,- “এ ধরার কৰ্ম্মভার মন বেদনিলে,