পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাল্য-জীবন । R চক্ষুতে এইরূপ ধূলি প্ৰক্ষেপ করিবার শক্তি মধুসূদনের কোন কালেই ছিল না । নিম্নলিখিত ঘটনা হইতে র্তাহার চরিত্রের এই বিশিষ্টতা সুন্দবরূপ প্ৰতিপন্ন হইবে । একবার তাহার এক পিতৃব্যপুত্র, তঁহাকে পরামর্শ দিয়া, কোন প্ৰতিবাসীর গাছ হইতে খেজুবরস চুরি করিতে লইয়া গিয়াছিলেন । দুই জনেই গাছে উঠিয়াছেন, এমন সময়ে, যাহার গাছ সে, জানিতে পারিয়া, তাড়া দিল। মধুসূদনের পিতৃব্যপুত্ৰ অনায়াসে পলাই যা গেলেন ; কিন্তু মধুসুদন, গাছেৰ উপব বসিয়া, উচ্চৈঃস্বরে কঁদিতে আরম্ভ কবিলেন । শেষে বাটীর একজন ভুতা, আসিয়া, তাহাকে গাছ চাইতে নামাইয়া, লইয়া গেল। পূৰ্ণবয়সেও তঁহার কত জন সঙ্গী, র্তাহাকে এইরূপে গাছে তুলিয়া দিয়া, পলাইলা গিয়াছিলেন। মধুসূদনের পলাইবার সামগ্য ছিল না ; তিনি ধরা পড়িয়া কলঙ্কভাজন হইয়াছিলেন । এই সকল ঘটনা অতি সামান্য, জীবন-চরিতে উল্লেখের অযোগ্য ; কিন্তু এক গাছি তৃণ উদ্ধে উৎক্ষেপ কবিলে যেমন বায়ুৰ গতি নিৰ্ণীত হয়, তেমনই এইরূপ সামান্য ঘটনা হইতেও, অনেক সময়ে, মনুষ্যেবা প্ৰকৃতি বুঝিতে পালা যায় বলিয়াই উল্লেখ করিতেছি। মধুসূদনের ১২১৩ বৎসব বয়সেব সময়ে তাহার পিতা তাঁহাকে শিক্ষাদানের জন্য, কলিকাতায় আনিতে সঙ্কল্প করিলেন। “মহা বিদ্যালয়” + 'তিন্দুকলেজের গৌরব তখন দেশব্যাপী হইয়াছিল। রাজনারায়ণ দত্ত পুত্ৰকে সেই মহা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করাইতে মনস্থ কৰিলেন। পিতার ইচ্ছানুসারে মধুৰ সুদন কলিকাতায় আসিলেন, এবং অল্পদিন খিদিরপুরেব কোন ইংৰাজী স্কুলে অধ্যয়নের পর, আনুমানিক ১৮৩৭ খ্ৰীষ্টাব্দে, হিন্দুকলেজে প্ৰবেশ করিলেন । নীতিজ্ঞগণ বলিয়া থাকেন, মনুষ্যের ভবিষ্যৎ-জীবন গঠনের পক্ষে শিক্ষার্থ কলিকাতায় আগমন । கு প্রাচীন হিন্দু কলেজ “মহা বিদ্যালয়” নামেও অভিহিত হইত।