পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/৬৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VYNO জীবম-চািত পৃথিবীর অনেক কবিরই জীবন শুর্তাহাদিগের কাব্যের ন্যায় শোকান্ত হইত না । মায়াকাননের ন্যায়, “বিষ না ধনুগুণি” নামক আরও একখানি নাটক, মধুসুদন, এই সময়, বঙ্গরঙ্গভূমির জন্য, লিখিতে প্ৰবৃত্ত হইয়াছিলেন। কিন্তু তাহার অতি সামান্য অংশমাত্রই তিনি রচনা করিতে পারিয়াছিলেন। বঙ্গরঙ্গভূমির অধ্যক্ষগণ র্তাহাকে যে পারিশ্রমিক প্ৰদান করিয়াছিলেন, ‘তাঁহাতে র্তাহার অসময়ে যথেষ্ট উপকার হইয়াছিল । কিন্তু সেরূপ সাহায্যের দ্বারা তাহার ক্লেশ স্থায়ীভাবে দূরীভূত হইবার সম্ভাবনা" ছিল না ; বঙ্গদেশে সে সময় মধুসূদনের গুণ-পক্ষপাতী ব্যক্তির অভাব ছিল না , সুতরাং মধুসূদনের দুরবস্থা সাধারণের গোচর করিলে বঙ্গসমাজ যে র্তাহার দুঃখে উদাসীন হইয়া থাকিতেন, তাহা বোধ হয় না । কিন্তু নিজের দুরবস্থা নিজে সাধারণের গোচর করা মধুসূদনের ন্যায় ব্যক্তির পক্ষে কিছুতেই সম্ভবপর ছিল না ; তিনি বরং সপরিবারে অনশনে থাকিতে পারিতেন, কিন্তু নিতান্ত আত্মীয় ও সুহৃদ ভিন্ন কাহারও নিকট কখনও নিজের দুব্যবস্থা ব্যক্ত করিতে পারিতেন না । যাহাদিগের সহিত র্তাহার ঘনিষ্ঠত ছিল, তাহাদিগের প্রায় সকলেই তঁহাকে পুনঃপুনঃ ঋণ বা সাহায্য দান করিয়াছিলেন ; সুতরাং তঁহাদিগেরও বিশেষ অপরাধ ছিল না। নিজের দুৰ্দশার সূত্রপাত হইবার পরে মধুসুদনকে তাহার দুহিতা শৰ্ম্মিষ্ঠার বিবাহ দিতে হইয়াছিল ; জষ্টিস দ্বারকানাথ মিত্ৰ প্ৰভৃতি অনেকেই সে সময় তাহাকে যথাযোগ্য সাহায্য করিয়ছিলেন । মহারাণী স্বর্ণময়ীকে একবার তাহার গ্রন্থাবলী উপহার প্রেরণ করিলে তিনিও মধুসুদনকে পাঁচ শত টাকা প্ৰদান করিয়াছিলেন। রোগশয্যায় মধুসুদন যাহাদিগের নিকট সর্বাপেক্ষা অধিক উপকার প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, তাহাদিগের মধ্যে সুপ্ৰসিদ্ধ, স্বদেশবৎসল ব্যারিষ্টার উমেশচন্দ্ৰ বন্দ্যোপাধ্যায় মহোদয়ের পীড়িতাবস্থায় শেষ সাহায্য ।