পাতা:মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবন-চরিত - যোগীন্দ্রনাথ বসু.pdf/৬৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপসংহার। মধুসূদনের জীবনের বিষাদময়ী আখ্যায়িকা সমাপ্ত হইয়াছে। তাহার গ্রন্থেৰ সহিত তাহার জীবনের সৌসাদৃশ্য প্ৰদৰ্শন করিয়া, এবং তঁাহার অনুষ্ঠিত কাৰ্য্যের সমালোচনা করিয়া, এইবার, আমরা আমাদিগের গ্রন্থ সম্পূর্ণ করিব । গ্ৰন্থ গ্রন্থকর্তার হৃদয়ের প্রতিবিম্ব স্বরূপ ; দৰ্পণাস্থ ছায়ার ন্যায় তাহাতে গ্ৰন্থকাবের মানস-মূৰ্ত্তি প্ৰতিবিম্বিত থাকে। পৃথিবীর অন্যান্য অনেক গ্রন্থকারের ন্যায় মধুসূদনেরও গ্রন্থাবলী অন্বেষণ করিলে আমরা তাহাতে তাহার প্রতিবিম্ব দর্শন করিতে পারি । একেই কি বলে সভ্যতা ও চতুৰ্দশপদী-কবিতাবলীতে তিনি তাহার জীবনের যে অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করিয়াছেন, আমরা তাহার কথা বলিতেছি না । যে চিত্তবৃত্তি পারিবারিক ও সাহিত্যিক প্ৰত্যেক কাৰ্য্যেই তঁহাকে প্ৰণোদিত করিত, তাহারই ভাব-সাদৃশ্যের কথা বলিতেছি । মধুৰ সুন্দনেব প্ৰতিভা এবং তঁহার চরিত্র, উভয়ই, পরস্পরের অনুরূপ। সৎপথেই হউক, আর অসৎপথেই হউক ; পারিবারিক জীবনই হউক, আর সাহিত্য-সম্বন্ধেই হউক, * কোনৰূপ নিষেধ-বিধির বশবৰ্ত্তী হইয়া কাৰ্য্য করা তাহার প্রকৃতি-বিরুদ্ধ ছিল । ইহাবই ফলে, একদিকে, সামাজিক নিয়ম উলঙ্ঘন করিয়া, তিনি অবলুম্বিত ধৰ্ম্মে, বৈবাহিক সম্বন্ধে, ও আশ্রমিক আচার, ব্যবহারে, স্বেচ্ছানুরূপ কাৰ্য্য করিয়াছিলেন, এবং অপরদিকে, স্বদেশীয় সাহিত্যে, চিরপ্ৰচলিত প্রথার উচ্ছেদসাধন করিয়া, তিনি নুতন, নূতন রীতি প্ৰবৰ্ত্তনে প্রণোদিত হইয়াছিলেন। তাহার সর্বোৎকৃষ্ট কাব্য মেঘনাদবধ ও তঁহার সর্বোৎকৃষ্ট নাটক কৃষ্ণকুমারী, মধুসূদনের গ্রস্থের ও জীবনের cनोमातृथु ।