পাতা:মাঘোৎসবের উপদেশ - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঈশ্বরের প্রেমের সঠিষ্ণুতা ক্ৰমে রজনী প্ৰভাত হইয়া গেল। সে ক্রমাগত পথ চলিতেছে। ক্ৰমে বেলা বাড়িতে লাগিল । ধনীর সংস্থান কখনও পথশ্রম স্বীকাৱ করে নাই, সুতরাং অল্প বেলা বাডিতে না বাড়িতে তাহার শরীর অবসন্ন ও চরণদ্বয় ক্লান্ত হইয়া আসিতে লাগিল ; তৃষ্ণায় কণ্ঠতালু শুষ্ক হইয়া আসিল ; ক্ষুধায় শরীরের বল ক্ষীণ হইয়া পড়িতে লাগিল । তখন যুবকের মনে কোনও স্থানে আশ্ৰয় লইয়া বিশ্রাম করিবার বাসনা উদিত হইল। ইতস্তত দৃষ্টিপাত করিতে করিতে অদূরে পথপ্ৰান্তে একখানি দোকান দৃষ্ট হইল। আশ্ৰয় লাভের আশায় উপস্থিত হইবামাত্র উক্ত গৃহের প্রভু আতি সমাদরে অভ্যর্থন পূর্বক তাহকে গ্ৰহণ করিল এবং ক্লান্তি নিবারণ করিয়া, ক্ষুধার অন্ন ও পিপাসার জল দিয়া তাহাকে পুনরুজ্জীবিত করিল। কিয়াংকাল বিশ্রামের পর যুবপুরুষ আবার বহির্গত হইল এবং ক্রমাগত চলিতে লাগিল। অবশেষে রাত্ৰি উপস্থিত, পুনরায় আশ্রয়ের প্রয়োজন ; পুনরায় উত্তম আশ্রয় জুটিয়া গেল। এক গ্রামে উপস্থিত হইবামাত্র কয়েক ব্যক্তি অতি সমাদরে তাহাকে একটি সুন্দর গৃহে লইয়া গেল। গৃহে প্ৰবেশ করিয়া দেখে যে, তন্মধ্যে সুন্দর সুকোমল শয্যা ও প্ৰয়োজনীয় সামগ্ৰীসকল প্ৰস্তুত। পান-ভোজন সমাধা করিয়া যুবক সুনিদ্রায় সেই স্থানে রাত্রি অতিবাহিত করিল। পরদিন প্ৰাতে চলিতে চলিতে একটি নদীর তীরে আসিয়া উপস্থিত। নদী উত্তীৰ্ণ হইবার উপায় নাই। ধনিসন্তান চিন্তায় নিমগ্ন আছে, এমন সময়ে হঠাৎ একখানি নৌকা আসিয়া উপস্থিত। তাহারা অতি সমাদরে তাহাকে পার করিয়া দিল । এইরূপে অনেক গ্রাম, জনপদ, নদনদী উত্তীর্ণ হইয়া সেই উদ্ধত যুবক অবশেষে কোনএক নূতন দেশে গিয়া বাস করিতে লাগিল।