পাতা:মাঘোৎসবের উপদেশ - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘোৎসবের উপদেশ তাহার উজ্জল ভবিষ্যদদর্শনের শক্তিতে ঋষির (seer) ন্যায় দেখিয়াছিলেন যে, ইংরাজি শিক্ষা ভারতবর্ষে প্ৰবিষ্ট হওয়া অবশ্যম্ভাবী ; এবং যখন তাহা হইবে, যখন এই ইংরাজি শিক্ষার নবীন আলোক ভারতবর্ষবাসীর মনে প্ৰবেশ করিবে, তখন তাহার শক্তিতে পুরাতন সংস্কারসকল ভাঙিয়া যাইবেই যাইবে । তৎপরে তিনি ভাবিতে লাগিলেন, তবে কি করা যাইবে ? পুরাতন সংস্কারগুলির সঙ্গে সঙ্গে কি ধর্মভাবও বিপৰ্যন্ত হইতে দেওয়া হইবে ? পারমার্থিকতাও কি আমাদের জাতীয় চিত্ত হইতে উঠিয়া যাইবে ? তাহা যদি হয়, তবে তা বড়ই বিপদ । তাহা হইলে কি করা যাইবে ? রামমোহন রায় গভীর ভাবে এই চিন্তায় নিমগ্ন হইলেন । তিনি যতই চিন্তা করিতে লাগিলেন, তাহার মনে হইল, পুরাতনের উপরে জোর দেওয়া আর বৃথা, তাহাকে রাখিবার চেষ্টা করিয়া আর কোনও ফল নাই। লোকে প্ৰাচীন দেবদেবী মানিবে না, জাতিভেদকে রাখিবে না, বেদ-বেদান্তকে অভ্ৰান্ত বলিয়া স্বীকার করিবে না, ও-সকলকে আর রাখা যাইবে না । যে জ্ঞানালোক আসিতেছে, তাহার নিকটে ও-সকল আর দাড়াইবে না। তখন কি করা যাইবে ? তখন কি হইবে ? ধীরভাবে রামমোহন রায় এ চিন্তা করিতে লাগিলেন। ঐ যে ধর্মের আবরণগুলি, ঐ যে বেদ-বেদান্ত প্রভৃতি, যাহাতে মানবহৃদয়ে ধর্মভাবকে ধারণ করিয়া আছে, ওগুলি না হইলে ধর্মের থাকা হইবে কি না ? চিন্তা করিয়া অনুভব করিলেন যে, ঐ যে সকল দেব-মন্দির, দেব-প্ৰতিমা, ঐ যে সকল গ্ৰন্থ, সেগুলি ধর্মের বহিরাবলম্বন মাত্র। এগুলি ব্যতীতও ধর্ম থাকিতে পারে। নিগুঢ় ভাবে দর্শন করিতে গিয়া প্ৰতীতি করিলেন যে, যতই চিন্তা করা যায় ততই প্ৰতীয়মান হয় যে, এ জীবন আমাদের নয়, জীবনের পশ্চাতে এক S 8