পাতা:মাঘোৎসবের উপদেশ - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বর্তমান যুগ ও পারমার্থিকতা দেশের লোকও জানুক যে, এই বর্তমান জানোন্নত যুগে, এই নবালোকপ্ৰাপ্ত সময়ে মহৰ্ষির জীবন এক মহানিশান-স্বরূপ । শাস্ত্রের অভ্ৰান্ততা অস্বীকার করিয়া, গুরু না মানিয়া, সকল প্ৰকার কুসংস্কার -বজিত হইয়া, সত্যস্বরূপ পরমেশ্বরের উপাসনার দ্বারা এ যুগেও যে মানুষ ধ্যানেতে ঋষি, প্ৰেমেতে ভক্ত, কর্তব্যসাধনে নীতিমান পুরুষ হইতে পারে, তার অত্যুজ্জল দৃষ্টান্ত মহর্ষি এই নবযুগে রাখিয়া গেলেন। এ কথা বড় সামান্য নয়। যদি চিন্তাশীল কেউ থাকেন, তিনি একবার চিন্তাতে ধারণ করিবার চেষ্টা করুন, কত বড় কথা মহর্ষি তাহার জীবনের দ্বারা আমাদিগকে বলিয়া গেলেন । “তোমরা যাকে ধর্মের ভিত্তি মনে করা, তোমরা অধিকাংশ লোক যাকে ধর্মের সর্বপ্ৰধান অবলম্বন মনে কর, তাকে পরিহার ক’রে, তাকে সম্পূর্ণ রূপে বর্জন ক’রে মানুষ সহজে ধর্মপথে অগ্রসর হতে পারে”- এই কথা তার সমগ্র জীবনের সাধনার দ্বারা মহাষি আমাদিগকে বলিয়া গেলেন । কিন্তু আমাদের কাছে ইহা কঠিনতা আনয়ন করিতেছে। আমি যতই এ বিষয়ে চিন্তা করি, ততই আমার কাছে এটা বড়ই কঠিন বোধ হয়। কেন কঠিন বোধ হয়, তাহাও বলা প্ৰয়োজন। যে পরিমাণে বর্তমান সময়ে দিন দিন জগতের সুখ ও ভোগ বাড়িয়া যাইতেছে, সেই পরিমাণে ইহা কঠিন হইতেছে। পূর্বকালে যতটা সাধনের প্ৰয়োজন হইত, এখন তাহ অপেক্ষা অনেক অধিক সাধনার প্রয়োজন হইয়াছে। কারণ, যে পরিমাণে বিস্তু সেই পরিমাণে বলপ্ৰয়োগ না। করিলে কাৰ্যে সিদ্ধিলাভ হয় না। ব্ৰাহ্মসমাজ মহৰ্ষির সাধনার ভাব উপার্জন করিতে না পারিলে এ দুষ্কর কার্যে সমর্থ হইবেন না। তঁহাদের ধর্মভাব যদি গাঢ় না হয় তাহা হইলে তঁাহারা যে কাজে হাত দিয়াছেন তাহা তঁহাদের দ্বারা সাধিত হইবে না। Σ » ዓዓ