পাতা:মাঘোৎসবের উপদেশ - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘোৎসবের উপদেশ যে সরিষা লইয়া ভূত ছাড়াইবে, সেই সরিষাতেই যদি ভূত লাগে, তবে আর ভূত তাড়াবে কি দিয়ে ? তোমরা যে ভারতবর্ষে আধ্যাত্মিকতা প্ৰতিষ্ঠিত করবে বলছি, আরো ! তোমাদেরই যদি আধ্যাত্মিকতা না হয়ে থাকে। তবে তোমরা তা করবে কি দিয়ে ? আমাদেরই যদি তেমন ব্যাকুলত না হয়ে থাকে, আমাদেরই যদি ইহাতে তেমন আগ্রহ না হয়, আমাদেরই ইহার প্রতি তেমন দৃঢ় ভােব না এসে থাকে, তা হলে আমরা কেমন ক’রে আশা করব যে, ইহার দ্বারা আমরা ভারতের আধ্যাত্মিক ব্যাধি দূর করব ? আজ মহৰ্ষির সাধনের কথা মনে করুন সকলে । তিনি যেমন ক’রে সাধন করেছিলেন, তা তার আত্মজীবনী পড়লে জানতে পারেন। সকলে । তা পাঠ করলে গায়ে কাটা দেয়, আপাদমস্তক বিস্ময়ে পূর্ণ হয়ে যায়। মনে হয়, যদি ধর্মকে ধরতে হয়, তবে এমনি ক’রেই ধারা উচিত । সকলে মুক্তা তোলার বিবরণ পাঠ ক’রে থাকবেন ; সিংহল, জাপান প্ৰভৃতি স্থানে যে মানুষ মুক্তা তোলে, তার বিবরণ যখন আমি পাঠ করি, আমার সমুদয় শরীর একেবারে কণ্টকিত হয়ে যায়। সেখানে কি দেখি ? প্রথমত দেখি উন্মোচন। শরীর হতে বস্ত্ৰাদি খুলে ফেলে দিচ্ছে। কাপড়খানা খুলে ফেললে, জামাজোড়া খুলে ফেললে ; আর যা কিছু সব খুলে ফেললে, খুলে ফেলে দিয়ে ডুবে গেল সমুদ্রের গভীর জলে। সেখানে তার কত বিপদ, হাঙ্গরে কেটে নিয়ে যেতে পারে, অন্য কোনও জলজন্তু এসে তার অনিষ্ট করতে পারে। কিন্তু সে দিকে তার দৃষ্টি নাই। সে সেখানে নেমে মুক্ত কুডুচ্ছে- সেখানে সাড়া নাই, শব্দ নাই, প্ৰতি মুহুর্তে তার মারা যাওয়ার সম্ভাবনা আছে, কেবল বেঁচে থাকবার জন্যে নাকে একটা নল বেঁধে দিয়েছে, যা দিয়ে বাতাস যেতে পারে- আর কোনও দিকে তার দৃষ্টি নাই, সে শুধু মুক্ত কুডুচ্ছে। » ግb”