পাতা:মাঘোৎসবের উপদেশ - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জাতীয় সাধনা মানবের সেবাই যে ঈশ্বরের সেবা, এ ভাব এ দেশে ফুটে নাই। সমাজের উন্নতিতে যে ধর্মের স্ফীতি, এ ভাব এদেশীয় ধর্মচিন্তায় প্রবেশ করে নাই। সমাজবিমুখতার আর-এক অনিষ্ট ফল। এই হইয়াছে যে, এ দেশের আপামর সাধারণ সকলের মনে এই বিশ্বাস বদ্ধমূল হইয়াছে যে, ধর্ম ব্যক্তিগত জিনিস। ইহার যে একটা সামাজিক দিক আছে, সে বিশ্বাস আমাদের দেশের লোকের নাই ৷ প্ৰত্যেক উপাসক এক এক মন্দিরে গিয়া তাহার ইষ্ট দেবতাকে ফুল দিবেন, সেখানে গিয়া একা একা তার পূজা করিবেন, তৎপরে চলিয়া যাইবেন । কিন্তু দশজনে মিলিত হইয়া যে ধর্ম করা যায়, সে বিশ্বাস। তঁহাদের মনে স্থান পায় নাই ; সামাজিক সাধনার ভাব তাহদের অন্তরে ফুটে নাই। তাহার ফল। এই হইয়াছে যে, দেশে সদনুষ্ঠান-সকল এক এক করা হইয়াছে, ধর্মচিন্তা এক এক করা হইয়াছে, পরোপকার এক এক করা হইয়াছে, খাতপূর্তাদি খনন, রথ্যা পান্থশালাদি নির্মাণ, মন্দিরের প্রতিষ্ঠা প্ৰভৃতি এক এক করা হইয়াছে। সকল প্ৰকার ভাল ভাল কাজ এ দেশের মানুষ এক একা করিতে চেষ্টা করিয়াছে ৷ পাচজনে এক হৃদয় হয়ে যে কাজ করা যায়, সে ভাব ইহাদের অন্তরে জাগে নাই। ধর্মের এই ব্যক্তিগত একাকিত্ব কেবল ধর্মের এই সমাজবিমুখত-নিবন্ধন। এই কারণে এখানে সামাজিক উদ্দেশ্যে একতা-প্রবৃত্তি ফোটে নাই, অপরাপর কারণের মধ্যে এ কাৰণেও জাতীয় একতা দুর্ঘট হইয়াছে । আজ স্বদেশপ্রেমিকগণ একতা-সুত্ৰে দেশকে বাধিতে চাষ্টিতেছেন ; ধর্মের সমাজবিমুখতা ও তজনিত ব্যক্তিগত স্বতন্ত্র-প্রবৃত্তি তাহার পথে মহা বিস্ত্র রূপে দণ্ডায়মান। তৃতীয় কারণ, নিয়তিতে বিশ্বাস। এই নিয়তিতে বিশ্বাস থাকার দরুন। এ দেশের লোক একেবারে শক্তিহীন, উদ্যমহীন হইয়াছে এবং ইহারা বিশ্বাস করে যে, কপালে যাঙ্গা লেখা আছে তাহা হবেই হবে। Σ ΝΟ SSV)