করায় দু’জনকে যে ঘা কতক দিতে হয়েছে তাতেই তার মনটা খুঁতখুঁত করছিল! যাদববাবুর হুকুম শুনে সে প্রায় চোর দুটির মতই ঘাবড়ে গেল।
মিনতি করে বলল, ‘মাপ করেন কর্তা, ছাইড়া দ্যান। আর করব না। কইছে।’
যাদববাবু বললেন, ‘তুই থাম। আইজ্ ব্যাটাগো মুখে লোহার ছ্যাকা দিয়া ছাড়ুম।’
তিনটি লণ্ঠন জালিয়ে এতক্ষণে বাড়ির সবাই উঠানে জড়ো হয়েছিল; কাছাকাছি দুটি বাড়ি থেকে দু’চার জন প্রতিবেশীও এসে জুটেছিল। দু তিনটি ছেলে-মেয়ে ভয় পেয়ে কাঁদতে আরম্ভ করছে। মাধববাবু বড় একটা টর্চ হাতে বেরিয়ে টর্চটি নিবিয়ে দিতে ভুলে গেছেন, দক্ষিণের ঘরের পিছনে মস্ত জামগাছটার মাথায় টর্চের আলো এদিক ওদিক পড়ছে।
যাদববাবুর জবাব শুনে নাগার বিনয়ের ভাবটা হঠাৎ যেন উপে গেল, সোজা হয়ে দাড়িয়ে সে বলল, ‘মাপ করেন কর্তা, অন্যেরে দিয়া চোর ধরাইয়া যত খুশী ছ্যাঁকা দ্যান, আমি যাগো ধইরা আনছি তাগো ছ্যাঁকা দ্যওন চলব না।’
সবাই ভাবে, সর্বনাশ, এবার ছোড়াটা গেছে। এ বেয়াদবি যাদববাবু কি সহ্য করবেন, ওর গায়েই এবার কটা ছ্যাঁকা পড়ে কে জানে! ইনানো বিনানো কান্না থামিয়ে আমচোর দুজন পর্যন্ত অবাক্ হয়ে তাকিয়ে থাকে নাগার দিকে।
কিন্তু যাদববাবু রাগ করলেন কি না ঠিক বুঝা গেল না, বললেন, ‘বড় যে দরদ দেখি রে নাগা?’
‘দরদ না কর্তা, কইয়া আনছি আর কেউ মারব না।’
যাদববাবু আর কথাটি না বলে ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়লেন। চোরের মত উঠে দাঁড়িয়ে আমচোর, দুজনে এক-পা দু-পা করে পিছিয়ে গিয়ে হঠাৎ ভোঁ দৌড় দিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেল। তারপর সকলেই ফিরে গেল যে যার বিছানায়। পরেশ লোহার শিক গরম করতে গিয়েছিল, এত রাত্রে শিক আর কোথায় পাবে, একটা খুন্তিকে পুড়িয়ে এনে দ্যাখে কি, উঠানে জনমানুষের চিহ্নও নাই। তাতানো খুন্তির ছ্যাঁকা পেলে মানুষ