যাদববাবু একটু হাসলেন।—“লঞ্চ তো খাসা বুঝলাম ভিমনা, কিন্তু লঞ্চ পুষুম ক্যামনে? গরীবের কি হাতী পোষণ চলে?”
যেখান থেকে লঞ্চটা কিনেছিলেন তারাই মোটা টাকা বাদ দিয়ে লঞ্চটা - ফেরত নিতে রাজী হয়েছে। বাদ দেওয়ার টাকার পরিমাণটা শুনে ভিমান সজোরে একটা আফসোসের শব্দ করল।
“এক কাম করেন কর্তা।”
“কি কাম ভিমন?
নাগার দিকে তাকিয়ে ভিমনা ইতস্ততঃ করতে লাগল। যাদববাবু একটু হেসে বললেন, “ডর নাই, কও। নাগা আমাগো ঘরের মানুষ।”
এবার ভিমনা নাগার দিকে চেয়ে হাসল। নাগাকে অবিশ্বাস করে সে তার কথাটা বলতে ইতস্ততঃ করে নি, নাগার সামনে বলাটা যাদববাবু পছন্দ করবেন। কিনা তাই সে ভাবছিল।
“আমার জানা মানুষে ইস্পিড-ওলা লঞ্চ চায়, অনেক টাকা দিবো কয়। আমাগো লঞ্চ দেইখা পছন্দ করছে। নোয়াখালি ছাড়াইয়া গিয়া জাহাজ থেইকা, মাল আনন। লাগবে। হাঙ্গামা বিশেষ নাই, তবে কি জানেন কর্তা, একটু পুলিশের ডর আছে। বুঝলেন না।”
যাদববাবু চিন্তিত মুখে নীরবে সায় দিলেন। ভিমনা ধীরে ধীরে তার বক্তব্য আরও বিশদভাবে বুঝিয়ে দিতে লাগল। তারপর হঠাৎ বলল, “এক কাম করেন কর্তা। তাগো ডাইক আনি, তাগো লগেই আলাপ করেন?”
এক ঘণ্টার মধ্যে সেই ফিরিঙ্গি সাহেব। আর চীনা ম্যানটিকে সঙ্গে নিয়ে ভিমনা ফিরে এল। দু’জনেরই সাজ-পোশাকের ঘটা আজ একটু বেশী। ফিরিঙ্গি সাহেবটি হাসিখুশী মিশুক মানুষ, লঞ্চে পা দিয়েই সুে এমন সহজভাবে, যাদববাবুর সঙ্গে আলাপ জুড়ে দিল যেন তারা কত কালের পরিচিত বন্ধু। তার সঙ্গীটি ঠিক উল্টো ধরনের মানুষ, চীনদেশের মানু যেমন হয়, -কথা আর হাসি খরচ করার ব্যাপারে বেজায় কৃপণ।
খানিকক্ষণ বাজে কথা নিয়ে নিছক ভদ্রতার আলাপের পর কাজের কথা উঠল—ভাসা ভাসা ভাবে। মেঘনার মৈাহানার কাছে বিদেশী জাহাজ থেকে নিষিদ্ধ মাল আমদানী করার কাজে যাদববাবু এই লঞ্চটিকে