লাগল, আরেকটু জোরে চালাও দাদা, কল খারাপ হইলে আমি দাম দিমু।
মাইল পািনর গিয়ে নির্জন তীর ঘেষে লঞ্চ থামল। ডিঙ্গিতে চেপে “ডাঙ্গায় উঠে নিতাই সাহা ভূড়ি নিয়েই ছুটতে আরম্ভ করল গ্রামের দিকে, সঙ্গে গেল লঞ্চের দু’জন যোয়ান খালাসী। খণ্টাখানেক পরে খালাসীর মাথায় একটা ট্রাঙ্ক চাপিয়ে নিতাই ফিরে এল। লঞ্চে উঠে ধপাস করে ডেকে বসে প’ড়ে সজোরে একটা নিশ্বাস ফেলল, মনে হল এতক্ষণ পরে' যেন তারা প্রাণ এসেছে।
লঞ্চ আবার ফিরে চলল শহরের দিকে। মাঝ পথে নদীর অপর তীরে এক গ্রামের কাছে লঞ্চ থামিয়ে ট্রাঙ্কটি নিয়ে নিতাই নেমে গেল। কোথায় সে ট্রাঙ্কটি রেখে এল সেই জানে, খালি হাতে ফিরে এসে ড়েকে ধপাস করে বসে পড়ল না বটে কিন্তু আরো জোরে একটা নিশ্বাস ফেলে কেঁচার খুটে কালের ঘাম মুছতে লাগল। শহরে পৌছে সে নেমে গল।
কিছুদিন আগে একটা ডাকাতি হয়ে গিয়েছিল, দশবারে হাজার টাকার জুড়োয়। গয়না। শেষ রাত্রে পুলিস একসঙ্গে নিতাই সাহার গ্রামের বাড়ীতে হানা দিয়ে খুজে খুজে হয়রান হয়ে গেল, গয়না বোঝাই ট্রাঙ্কটির সন্ধান পাওয়া গেল না। বিকালে নিতাই সাহা এল। এক গাল হেসে বলল, “কত দিমু যাদববাবু? তিনশ দেই?
যাদববাবু বললেন, “ভিমনার লগে যা ঠিক হইছিল দ্যান।”
ভিমনা বলল, “পাচশো দিবেন কইছিলেন।”
নিতাই সাহা বলল, “তা কইছিলাম—তবে কি জানেন যাদববাবু, কতটুকু পথ আর গেছেন। আসছেন, গরীব মানুষ আমি-"
ভিমনা মাথা নেড়ে বলল, “আমরা আরও গরীব।”
তখন পাঁচশো টাকা যাদববাবুর হাতে দিয়ে নিতাই সাহা বিদায় নিল। পনির মাইল যাতায়াতের জন্য পাঁচশো টাকা। টাকাটা নাড়াচাড়া করতে করতে যাদববাবু আনমনে বললেন—“চোরাই মাল।”
ভিমনা মৃদুস্বরে বলল, “তা যদি কন কর্তা—”
যাদববাবু সজোরে মাথা নেড়ে বললেন, “না, ভিমমা আমি কিছুই