পাতা:মাদল - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মাদল

ক্ষণেকের পর পূজারী ঠাকুর দাঁড়ালো দুয়ারে আসি’
শূদ্রেরে হেরি’ বিদ্রূপ স্বরে কহিল ঈষৎ হাসি,—

মায়ের এ পূত আঙ্গিনা মাড়াতে নাহি হ’ল তোর লাজ
দেবীর দুয়ারে পুণ্য আগারে শূদ্রের কিবা কাজ?—”

পূজারীর বাণী দিল শেল হানি’ শূদ্রের ছোট বুকে
স্তব্ধ হইয়া দাঁড়ায় শূদ্র ভাষা নাহি ফুটে মুখে,
জবাফুল দুটি হাত হ’তে তার খসিয়া পড়িল ভূমে,
ধন্য হইল ধরণীর বুক শূদ্রের ফুল চুমে।

পুষ্প হেরিয়া পূজারীর চোখে ক্রোধানল এল ছুটি’,
রক্তের রংএ রঞ্জিত হ’ল পূজারীর আঁখি দুটি’

নীরব ক্ষণেক রহিয়া সহসা পূজারী গরজি’ উঠি
শুধালো তাহারে——“মায়ের চরণে দিতে চাস ফুল

হেন আশা তোর ক্ষুদ্র হৃদয়ে উদিল কেমন করে’?
ভুলেছিস বুঝি জন্ম যে তোর অপবিত্রের ঘরে।”

নির্বাক হ’য়ে রহিল শূদ্র শুনি পূজারীর বাণী,
সজল নেত্রে হেরিতে লাগিল মায়ের মূরতি খানি।

৩৭