এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৯৬
শূন্য গৃহে
‘নহ তুমি পরিত্যক্ত অনাথ সন্তান
চরাচর নিখিলের মাঝে—
তোমার ব্যাকুল স্বর উঠিছে আকাশ-’পর
তারায় তারায় তার ব্যথা গিয়ে বাজে।
কাল ছিল প্রাণ জুড়ে, আজ কাছে নাই—
নিতান্ত সামান্য এ কি নাথ?
তোমার বিচিত্র ভবে কত আছে কত হবে,
কোথাও কি আছে, প্রভু, হেন বজ্রপাত?
আছে সেই সূর্যালোক, নাই সেই হাসি,
আছে চাঁদ, নাই চাঁদমুখ।
শূন্য পড়ে আছে গেহ, নাই কেহ, নাই কেহ;
রয়েছে জীবন, নেই জীবনের সুখ।
সেইটুকু মুখখানি, সেই দুটি হাত,
সেই হাসি অধরের ধারে,
সে নহিলে এ জগৎ শুষ্ক মরুভূমিবৎ—
নিতান্ত সামান্য এ কি এ বিশ্বব্যাপারে?
এ আর্তস্বরের কাছে রহিবে অটুট
চৌদিকের চিরনীরবতা?
সমস্ত মানবপ্রাণ বেদনায় কম্পমান,
নিয়মের লৌহবক্ষে বাজিবে না ব্যথা!
গাজিপুর। ১১ বৈশাখ ১৮৮৮