পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भांकि aiहावनाँ টাকার প্রাপ্তিসংবাদ দিয়া হারানকে সে একখানা পত্র লিখিল । হারানের ছিল সে যে ধরিতে পারিয়াছে সে সব কিছু লিখিল না, লিখিল অ্যার জন্মে সে বোধ হয়। হারানের মেয়ে ছিল, হারান তার জন্য যা করিয়াছে এবং করিতেছে জীবনে কখনো কি শ্যামা তাহা তুলিবে ? এমনি আবেগপূর্ণ অনেক কথাই শ্যাম লিখিল । হারান জবাবও দিল না ! না দিক । শ্যামা তো তাহকে চিনিয়াছে। শ্যামার দুঃখ নাই । শীতলের সঙ্গে শ্যামার যোগসূত্র শীতলের কয়েদ হওয়ার গোড়াতেই ছিন্ন হইয়া গিয়াছিল, জেলে গিয়া কখনো সে শীতলের সঙ্গে দেখা করে নাই, চিঠিপত্রও লেখে নাই। কোথায় কোন জেলে শীতল আছে তাও শ্যামা জানে না । আগে জানিবার ইচ্ছাও হইত না ! এখন শীতলের ছাড়া পাওয়ার সময় হইয়া আসিয়াছে। সে কোথায় আছে, কবে খালাস পাইবে মাঝে মাঝে খামার জানিতে ইচ্ছা হয়। কিন্তু জানিবার চেষ্টা সে করে না । শীতলকে কাছে পাইবার বিশেষ আগ্ৰহ শ্যামার নাই । সব সময় সে যে স্বামীর উপর রাগ ও বিদ্বেষ অনুভব করে তাহা নয়, বরং কোথায় লোহার শিকের অন্তরালে পাথর ভাঙিয়া সে মরিতেছে ভাবিয়া সময় সময় মমতাই সে বোধ করে, তবু মনে তাহার কেমন একটা ভয় জন্মিয়া গিয়াছে। শীতল ফিরিয়া আসিলে আবার সে দারুণ কোনো বিপদে পড়িবে। তা ছাড়া ব্যস্ত হইয়া লাভ কি! ছাড়া পাইলে স্ত্রী-পুত্ৰকে শীতল খুজিয়া লইবে নাকি ? বেশ শান্তিতে আছে সে । নাইবা রহিল। তাহার নিজের বাড়িতে থাকিবার আনন্দ, আর্থিক স্বচ্ছলতার সুখ ? এখানে ছেলেমেয়েদের শরীর ভাল আছে, বিধানের অদ্ভুত পড়াশোনার ফল ফলিতেছে, স্কুলের হেডমাস্টার নিজে রাখালকে বলিয়াছেন বিধানের মতো ছেলে ক্লাশে দুটি নাই। শ্যামা আবার আশা করিতে পারে, ধূসর ভবিষ্যতে আবার রঙের ছাপ লাগিতে থাকে। নাইবা রহিল তাহার নিকট আশা ভরসা, একদিন ছেলে তাহাকে সুখী করিবে। কেবল পড়িয়া পড়িয়া বিধান রোগ হইয়া যাইতেছে, এত ও রাত জাগিয়া