পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/১৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शकि इौ সুবৰ্ণকে ? শ্যামা আগাইয়া গেল, বলিল, বৌমা, কিছু খাও নি বিকেলে, এসে তোমায় CoCVS fà | নতুন বৌয়ের আর ভাল মন্দ কি, সে তো শুধু এতকাল লজ্জা, ভয়, নম্রতা, তবুও ওর মধ্যেই মনটা বোঝা যায়, সরল না। কুটিল, কুড়ে না। কাজের লোক । মা-হারা মেয়ে ? কথাটা শ্যামার মনে থাকে না,-তুমিই আমার হারাণে মা, বলিয়া শ্যামার স্নেহের ভাণ্ডারে ডাকাতি করিবার মেয়েও সুবৰ্ণ নয়, সে সরল কিন্তু বুদ্ধিমতী, কাজের মানুষ কিন্তু কুল রমণী নয়। দরকার মত একখানা দুখানা বাসন সে বাসন-মাজার মতই মাজিয়া আনে, কাজটুকু করিতে পাইয়া এমন উৎফুল্ল হইয় ওঠে না যে মনে হইবে পুষ্প-চয়ন করিতে পাইয়াছে। শাশুড়ীর হাতের কাজ কাড়িয়া যে বৌ কাজ করে কোনো শাশুড়ীই তাকে দেখিতে পারে না, সুবৰ্ণ সে চেষ্টা করে না, স্বাভাবিক নিয়মে যে সব কাজ শ্যামার হাত ৷ হইতে খসিয়া তাহার হাতে আসে মন দিয়া সেইগুলিই সে করিয়া যায়, আর একটি সজাগ দৃষ্টি পাতিয়া রাখে শ্যামার মুখে, আলো নিভিয়া মেঘ ঘনাইয়া আসিবার উপক্রমেই চালাক মেয়েটা ক্ৰটি সংশোধন করিয়া ফেলে । নেহাত দোষ করিয়া ফেলিলে প্রয়োগ করে একেবারে চরম অস্ত্ৰ । চোখ দুটা জলে টাবুটুবু ভৰ্তি করিয়া শ্যামার সামনে মেলিয়া ধরে। ভাল করিয়া শুরু করার আগেই শ্যামার মুখের কথাগুলি জমিয়া যায়। শ্যামা হঠাৎ সুর বদলাইয়া সস্নেহে হাসিয়া বলে, আ আবাগীর বেটি, এই কথাতে চোখে জল এল । কি আর বলেছি মা তোকে এ্যা ? চোখ । অশ্রুসজল চোখকে শ্যামা বড় ডরায় । মানুষের চোখের সম্বন্ধে সে বড় সচেতন । চোখ ছিল তার বকুলের আর চোখ হইয়াছে বকুলের মেয়েটার। শ্যামার মেয়েটি অন্ধ, এত যে আলো জগতে একটি রেখাও তার খুকীর চেতনায় পৌঁছায় না। সজল চোখে চাহিয়া যে-কোন দৃষ্টিমতী শ্যামাকে সম্মোহন করিতে পাৱে । বড় দোটনায় পড়িয়াছে শ্যাম । ছেলের বৌটাকে ভালবাসিবে কি বাসিবে না। &,O o