পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छनौ এমনি মন্দ লাগে না, মায়া করিতে ইচ্ছা হয়, বকুল যে ফাকটা রাখিয়া গিয়াছে সুবৰ্ণকে দিয়া তাহা ভাবিয়া তুলিবার কল্পনা প্রিয়ই মনে হয় শ্যামার। কিন্তু হঠাৎ তাহার চমক ভাঙ্গে, উঃ একি হিল্লোল তুলিয়া সামনে দিয়া হঁটিয়া গেল বৌ, একি আগুন ওর দেহময় ? এমন করিয়া কে ওকে গড়িয়াছিল, রক্তমাংসের এই মোহিনীকে ? সুবৰ্ণ স্বান করে, চাহিয়া দেখিয়া শ্যামার বুকের রক্ত যেন শুকাইয়া যায়। বড় ভয় করে শ্যামার। কে জানে ওরা ওই ভয়ানক সুন্দর দেহের আকর্ষণে কোথা দিয়া অমঙ্গল ঢুকিবে সংসারে। কড়া শীতে যেমন হইয়াছিল, চড়া গরম পড়িতে শ্যামার শরীর আবার তেমনি খারাপ হইয়া গেল । এবার একটা অতিরিক্ত উপসর্গ দেখা দিলতিরিক্ষে মেজাজ। অল্পে অল্পে আরম্ভ করিয়া জ্যৈষ্ঠের শেষে বকুনি ছাড়া কথা বলাই যেন সে বন্ধ করিয়া দিল । থাকে থাকে। তেলে-বেগুনে জলিয়া ওঠে, যাকেই পায় তাকেই যত পারে বকে, তারপর অদৃষ্টের নিন্দা করিতে করিতে কঁাদিয়া ফেলে। শ্যামার ভয়ে বাড়িশুদ্ধ সকলের মুখ সর্বদা শুকনো দেখায়। সবচেয়ে মুস্কিল হয়। সুবর্ণের। অন্য সকলে শ্যামার সম্মুখ হইতে পালাইয়া বঁাচে, তার তো পালানোর উপায় নাই । তার উপর বিধান আবার তাহাকে হুকুম দিয়া রাখিয়াছে, সব সময় কাছে কাছে থাকবে মার, যা বলেন শুনবে, আগুনের আঁচে বেশি যেতে দেবে না, ওপোর-নিচ করতে দেবে না, সেবাযত্ন করবে।--মার শরীর ভাল নয় জান ত ? বিধান বলিয়াই খালাস, সকালে উঠিয়া ছেলে পড়াইতে যায়, বাড়ি ফিরিয়াই ছোটে আপিসে, ফেরে সন্ধ্যার পর, সারাদিন শ্যামা কি কাণ্ড করে সে তো দেখিতে আসে। না, সুবর্ণের অবস্থা সে কি বুঝিবে। কিছু বলিবার উপায়ও সুবর্ণের নাই। কি বলিবে ? যদি বলিতে যায়, বিধান যে ভাবিয়া বসিবে,-দ্যাখে এর মধ্যে নালিশ করা শুরু হইয়াছে। কিন্তু বিধান সব বোঝে। চিরকাল বুঝিয়া আসিয়াছে। সুবর্ণ এখনো-জানে না যে বুঝিয়াও বিধান কোনদিন কিছু বলে না, চুপচাপ নিজের কাজ করিয়া যায়, চুপচাপ উপায় ঠাওরায়। বনৰ্গীয় শ্যামা একবার পাগল হইতে বসিয়াছিল। এবারও সেই রকম আরম্ভ হইয়াছে দেখিয়া বিধান কম ভয় পায় নাই, প্ৰতিবিধানের কোন উপায় শুধু সে খুজিয়া পাইতেছে না। ব্যাপারটা সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যুঘটিত, So Y