পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/১৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नौ শ্যামা বলে,-হঁ্যা গা, বড় কি কষ্ট হচ্ছে ? কি করবে বল দেখি ? বোমা বসবে একটু কাছে ? গায়ে হাত বুলিয়ে দেবে ? কোনখানে কষ্ট তোমার ? ও মণি ডাক তো তোর বৌদিকে, ওষুদ মালিশ করে দিয়ে যাক।-কোথায় যে যায়, ফাক পেয়েই কি ছেলের সঙ্গে ফুসফাস গুজগাজ করতে চললকি মন্ত্র দিচ্ছে কানে কে জানে । সুবৰ্ণ ওষুধ মালিশ করিতে বসে। শ্যামা বলে, দেখ তো মণি ও-বাড়ির ছাদে কে ? নকুড়-বাবুর বঁশি বাজানো ভাইটে বুঝি ? দেতো দরজাটা ভেজিয়ে, বোমা, আরেকটু সামলে সুমলেই না হয় বসতে বাছা, একটু বেশি লজ্জা থাকলে ক্ষেতি নেই কারো। সুবৰ্ণ জড়সড় হইয়া যায়, রাঙা মুখ নত করে। শ্যামা যখন এমনিভাবে বলে কোন উপায়ে মিশাইয়া যাওয়া যায় না শূন্যে ? ভাল লাগে না, বলিয়া শ্যামারও ভাল লাগে না ! সুবর্ণের স্নান মুখখানা দেখিয়া কত কি সে ভাবে ! ভাবে, সে যদি আজ আমনি বৌ হইত এবং আর কেহ যদি আমনি করিয়া তাকে বলিত, কেমন লাগিত তার ? বিধানের কানে গেলে কত ব্যথা পাইবে সে । মণি বড় হইতেছে, কথাগুলি তার মনে না-জানি কি ভাবে কাজ করে। একি স্বভাব, একি জিহবা হইয়াছে তার ? কেন সে না বলিয়া থাকিতে পারেন ? শ্যামা বাহিরে যায়। বর্ষার মেঘলা দিন । ধানকলের অঙ্গনে আর ধান মেলিয়া দেয় না, অতবড় অঙ্গনটা জনহীন, কুলিরমণী নাই, পায়রার ঝাক নাই। খুঁকিকে শ্যামা বুকের কাছে আরও উচুতে তুলিয়া ধরে। বিধানের বেীকে কি কটু কথা শ্যামা বলিয়াছে, কি বিষাদ শ্যামার মনে-দিগ দিগন্ত চােখের জলে ঝাপসা হইয়া গেল । আশ্বিনের গোড়ায় হারাধন মেয়েকে লইয়া গেল । যাওয়ার সময় সুবৰ্ণ অবিকল মা-হারা মেয়ের মতই ব্যবহার করিয়া গেল। শ্যামা ভালবাসে না, শ্যামা কটু কথা বলে, তবু মনে হইল সুবৰ্ণ যাইতে চায় না, এখানে থাকিতে পারিলেই খুশী হইত। শ্যামা নির্বিবাদে ভাবিয়া বসিল, এ টান বিধানের জন্য।-সে যা ব্যবহার করিয়াছে তার জন্য সুবর্ণের ১ কিসের भiथांवJथ ? পূজার পরেই আমায় আনাবেন মা -সুবর্ণ সজল চোখে বলিয়া গেল। RA NO