পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/২০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাণিক গ্ৰন্থাবলী আড়তে জমা করে, পুৱীষ্য ও পাকের কোমল গভীর স্নেহে দেহের ভার নামাইয়া এই তিন জোড়া মহিষ অবসর সময়টা জােবর কাটে আড়তের ঠিক পিছনে-রােস্ত হইতে অনেকটা চোখে পড়ে, গন্ধও পাওয়া যায় কিছু কিছু । কাছেই ডাইমণ্ড র্যাষ্টি ব্ল্যান্ট ; ফাষ্টকেলাশ চা রুটি মাখন চপ কাটলেট ডবল ডিমের মামলেট ( মাত্র তিন পয়সা ) ইত্যাদি পাইবেন বলিয়া মালিক রাধানাথ দে স্বহস্তে সাইনবোর্ড লিখিয়া রাখিয়াছে। একরকম গা ঘোষিয়াই টিনের চালার নীচে লোচন সাউ-এর মুড়িচিড়ার দোকান, কাচ বসানো টিনের পাত্রে বাতাসা, দড়িতে ঝুলানো তিলুড়ি, এক ছড়া চাপা কলা-। ছোট স্যা করার দোকান, কামারের দোকান, টিনের মগ-বালতি তৈরী আর ঘটিবাটি ঝালাই করার দোকান, সাইকেল মেরামতের দোকান এসবও আছে। আর কিছু দূরে আছে বড় বড় কারখানা । হাপরের দড়ি টানিতে টানিতে তিনু রক্তবর্ণ লোহার পাতে হাতুড়ি পিটাইতে পিটাইতে বিশু আর অবাধ্য লোহার পাতকে মনোমত অকৃতি দিবার চেষ্টা করিতে করিতে বেন্দ যখন হাঁপাইয়া পড়ে, তখন বেন্দাই হয়ত চোখ তুলিয়া তাকায় সেইদিকে, যেদিকে আছে বড় বড় কারখানাগুলি । প্ৰকাণ্ড একটা লাল দালানের লাগাও বিরাট একটি টিনের শেড আর তিনটি মোটা মোটা চোঙা পরিষ্কার দেখা যায়, অন্যগুলি একটু আড়ালে পড়িয়াছে। একি কাণ্ড, এ্যা ? ক’ত বিঘা জমি জুড়িয়া না জানি কারখানাগুলি গড়া হইয়াছে ? নিবিড় কালো কি ধোয়াটাই উঠিয়া যাইতেছে চোঙাগুলি দিয়া আকাশের দিকে । বেন্দা জানে, বিদ্যুতে যেমন কাচের ভিতরে অবিরাম শিখাহীন আলো জলে, তেমনি অবিরাম কলও চলিতে পারে, সব কল ধোয়া ছাড়ে না । কিন্তু উৰ্দ্ধমুখী চোঙা দিয়া যে ধোয়া বাহির হয়, বেন্দর কাছে তাই কেবল কলুকারখানার ७वंडौक । 道 যশোদা যখন একসঙ্গে তিনটি বড় বড় কয়লার উনুনে আঁচ দেয় তখনও বড় কম ধোয়া হয় না । শীতকালে ধোয়াটা যেন যশোদার বাড়ী ছাড়িয়া নড়িতে চায় না, যশোদার বাড়ীর ছোট উঠানে, ইট আর টিনের ছোট-বড় কঁচা পাক ঘরগুলির মধ্যে স্থায়ীভাবে আটকাইয়া থাকিতে চেষ্টা করে । কিন্তু এখন, বৈশাখের প্রথমে, অনেক দূরের সমুদ্র হইতে ফুরফুরে বাতাস আসিয়া সকাল R) o