পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/২২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাণিক গ্ৰন্থাবলী বাগানের মধ্যে গাছপালার আড়ালে একটা আখড়া ছিল কুন্তীর এবং সেই আখড়ার ওস্তাদ ছিল কেদার নামে একটি মাঝবয়সী লোক। মাথা গিয়া ঠেকিত ঘরের ছাতে, দরজা দিয়া যাতায়াত করিতে হইত। পাশ ফিরিয়া, রাস্তায় ষাড়কে সরাইয়া সে পথ চলিত। মানুষ যে আমন যোয়ান হয় তাকে যারা চোখে না। দেখিয়াছে তাদের কি তা বিশ্বাস হয় ? রূপকথার রাজপুত্রের মত কোথা হইতে আসিয়া দু-একটা বছর এ পাড়ায় বাস করিয়া, পাড়ার ছেলেদের কুস্তী শিখাইয়া, পদক্ষেপে দু’পাশের বাড়ী কঁপাইয়া পথ দিয়া হঁটিয়া কে জানে আবার সে কোথায় চলিয়া গিয়াছে। সে চলিয়া যাওয়ার পর বিশ্বসংসারে যশোদা নাকি আর পুরুষ দেখিতে পায় না, সকলে তার কাছে শিশু । আজও যশোদা তার সেই ভালবাসার লোকটির পথ চাহিয়া আছে। যশোদা শুনিয়া হাসে-তো নয় ? চেয়ে চেয়ে চোখ ভেরে গেল। সত্যি । ইবারে यन् िन शॊ व्नि-? অনেকেই মনে মনে বলে, “মরণ তোমার বেহায়া !” কিন্তু দু-চার জন ভাবপ্রবণ যারা আছে তারা মনে মনে বলে, “আহা !” ব্যাকুল আগ্রহে তারা যশোদার মুখে একটু বেদনার ছাপ খোজে, চােখের দৃষ্টিতে একটু ব্যথার আভাষ দেখিতে চায়। কিন্তু হায়রে যশোদার হাতীর দেহে হাতীর প্রাণ, এক মুহূৰ্ত্তের জন্য যদি তার চোখে-মুখে স্বপুময় ব্যথিত বেদনার ছাপ দেখা গেল ! বাড়ী দু’টিতে যশোদা যদি কেবল গরীব ভদ্ৰগৃহস্থদের ভাড়াটে রাখিত তবে কোন কথা ছিল না। প্ৰথমে কিছুকাল ঐরকম ভাড়"টেই যশোদা খুজিত, মাল সরকার, ট্রামের কণ্ডাক্টর, প্রেসের কম্পোজিটার এই শ্রেণীর ভাড়াটের নীচে সে নামিতি না । তারপর সমস্ত বাছ-বিচার তুলিয়া দিয়াছে। ভদ্রলোকেরা নাকি বড় বেশী ছোটলোক, যারা পুরা ভদ্রলোকও নয়। খাটি ছোটলোকও নয়, তারা নাকি একটা অদ্ভুত অপদার্থ জীব। তার চেয়ে কুলি-মজুত্বও ভাল। বাবুদের চক্ষুলজ্জা আছে, কুলি-মজুরের ভয়ডর আছে, কিন্তু না-বাবু ন-কুলি-মজুদের চক্ষুলজাও নাই, ভয়ডরও নাই। সাহসের অভাব হইলে যে ভয়ডর হয়। সে ভয়ডরের কথা যশোদা বলিতেছে না, ও-রকম ভয়ডর এ শ্রেণীর লোকগুলির পুৱা মাত্রাতেই আছে, সে হিসাবে ওরা সব কেঁচোর মত অপদাৰ্থ জীব, ওদের ভয়ডৱ নাই ধৰ্ম্ম ও ঈশ্বর সম্বন্ধে, তিল তিল করিয়া আত্মহত্যা করা সম্বন্ধে আর Reo