পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/২৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अश्बङनौ হইত। তারপর দু-এক টাকা করিয়া মােস তিনেকের মধ্যে যশোদা প্ৰায় দশ বারে টাকা আদায় করিয়া নিয়াছে বটে, কিন্তু যাচিয়। জরিমানার টাকা দিয়া কেউ কি সুধীরকে কোনদিন জেল হইতে বঁাচাইয়াছে ? ‘সত্যি বলছি মতিদা ? কি সত্যি বলিয়াছে মতি ? অ, যশোদার কথা । সত্য বৈকি, যশোদাকে তো চেনে না। সুধীর, ওসব সে বুঝিবে না । মেজাজটা একটু যা খারাপ যশোদার, চেহারাটাও হাতীর মত, কিন্তু সকলের জন্য বড় মায়া যশোদার, আমন মেয়েমানুষ হয় ?-“একটা বিড়ি দে তো ! গাটা কেমন করছে সুধীর, কালকের নেশােটা এখনো কাটে নি।” “বিড়ি নেই।” “দে-না একটা ? কেমন ধারা মানুষ যেন তুই সুধীর ।” সুধীর বিরক্ত হইয়া বলিল, “নেই তো দেব কোথা থেকে ? গড়াব ?? একটা বিড়ির জন্যেই দুজনের মধ্যে যেন মনোমালিন্য ঘটিবার উপক্রম হয়। মতি খানিক আগে আর সুধীর খানিক পিছনে চলিতে থাকে । এত সকালেই বড় রাস্তায় গাড়ী অার মানুষের ভিড় হইতে আরম্ভ করিয়াছে। দশটা এগারটার সময় এ রাস্তায় চলাই দুষ্কর হইয়া পড়ে। ঠেলা গাড়ী, মহিষের গাড়ী, লরী। আর বাসের সংখ্যা বাড়িতে বাড়িতে এমন হইয়া দাড়ায় যে থাকিয়া থাকিয়া মোটর গাড়ীকেও গরুর গাড়ীর সঙ্গে সমান তালে শামুকের গতিতে চলিতে হয়, মাঝে মাঝে জমাট বাধিয়া সমস্ত গাড়ীর গতিই কিছুক্ষণের জন্য একেবারে স্থগিত হইয়া যায়। তখন পথের দিকে চাহিলে মনে সংশয়ই জাগে, একি সহরতলীর পথ না সহরের কেন্দ্র ? সংশয় দূর হয় যখন মনে পড়ে সহরের কেন্দ্র এ রকম অপরিচ্ছন্ন নোংরা নয়, সেখানে পথের ধারে বুদবুদ তোলা পচা পাকে ভরা ছোটখাট খালের মত এ রকম নদীমা নাই, গোঁয়ে ধরণের দোকানপাট আর সেকালের ধরণের আড়ৎ নাই, এত বড় বড় মিল নাই, এ ধরণের মালবাহী গাড়ী সেখানে এভাবে জড়াজড়ি করে না, সেখানে দামী ও সুদৃশ্য প্রাইভেট কারের স্রোত কেবল রঙীন বৈদ্যুতিক আলোর ইঙ্গিতে কিম্বা ট্রাম-বাস প্রভৃতি মানবজাতীয় মালবাহী গাড়ী আর মানুষের ভিড়ে গতিহীন হয়, সেখানে পথের ধারে প্রত্যেকটি বাড়ী রাজপুৰী, প্রত্যেকটি দোকান শুধু এই বাণীর রূপক যে ধনী ছাড়া পৃথিবীতে মানুষ & 8) Vy)