পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/২৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরতলী ওদের বোঝাবার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু ওরা তাকে কথাই বলতে দিচ্ছে না, হৈচৈ করছে। একজন একটা ঢ়িল ছুড়েছে। অনাথবাবুর দিকে, গায়ে লাগে নি।” জবাবে সত্যপ্রিয় বলিল, আপনি একটি অন্ত গৰ্দভ কাশীবাবু! ওই দশজনকে দাঙ্গা করার জন্য পুলিশে দিলেই চুকে যেত-বরখাস্ত করে ছেড়ে দিলে ওরা মিলের মধ্যে এসে গোল বাধাবে এটুকু বুঝবার মত বুদ্ধিও আপনার ঘটে নাই ? শুধু বরখাস্তই যদি করবেন, এতকাল করতে পাৱতেন না, সুযোগের জন্য অপেক্ষা করার কি দরকার ছিল ?” “আজ্ঞে অনাথবাবুকে ফোন করলাম, অনাথবাবু বললেন—” ‘অনাথ আপনার মতই গাধা । ডেকে আনুন। অনাথকে, বুঝিয়ে আর কিছু হবে না। পুলিশকে খবর দিচ্ছি, পুলিশ এলেই মিল খালি করে গেট বন্ধ করে দেবেন।” সন্ধ্যার পর মতি, সুধীর আর ওই দশজন বরখাস্ত শ্রমিকের সঙ্গে প্ৰায় শ'দুই শ্রমিক যশোদার বাড়ীতে আসিয়া হাজির। উঠানে স্থান হইল ত্রিশ পয়ত্ৰিশজনের, বাকী সকলে সরু গালিটুকুর মধ্যে গাদাগাদি করিয়া আর গলির মোড়ে রাস্তায় ভিড় করিয়া দাড়াইয়া রহিল । সুধীর খুব ল{ফালাফি করিতেছিল, যশোদার ধমকে থামিয়া গেল। খন্তি হাতে রান্না ঘরের দরজায় দাড়াইয়া প্ৰথমে যশোদা একরকম হুড়মুড় করিয়া বাড়ীর মধ্যে ঢুকিয়া পড়ার জন্য একচেটি গালাগালি দিল সকলকে, তারপর মন দিয়া ব্যাপারটা সব শুনিল, তারপর আবার গালাগালি দিয়া বলিল, “তোমরা সবাই পাঠা, এক ফোটা বুদ্ধি নেই তোমাদের কারু ঘটে । দল বেঁধে হল্লা করলেই হবে ? দু’নম্বর মিলে ছুটে যেতে পারলে না। সবাই মিলে, সেখানেও ধৰ্ম্মেঘট করাতে পারলে না ? “তইতো বটে-এটা তো খেয়াল হয় নাই কারো । কি করা যায় এখন ? “কি আবার করবে ? পাঁচ দশজন মিলে খুঁজে খুঁজে বার করগে দু’নম্বরের যতজনকে পার। কাল ভোর না হতে তোমরা সবাই গিয়ে দু’নম্বরে ধরে দেবে। এবার ভাগে সবাই আমার বাড়ী থেকে, দম আটকে মারবে নাকি ?” বাছিয়া বাছিয়া কয়েকজনকে একটু বসিয়া যাইতে বলিয়া বাকী সকলকে যশোদা বাড়ীর বাহির করিয়া দিল। তারপর ওই বাছা বাছা কয়েকজনের সঙ্গে পরামর্শ করিল দু’ঘণ্টা ধরিয়া। &Bt