পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/২৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহয়তলী রাজার জাত হতে পারব, নয় তো কোনদিন পারব না। এসব কোন দেশী कथं भांशे ?' “যুক্তিও তো দিয়েছেন।” “যুক্তি ? আমন যুক্তি আমরাও দিতে পারি শুনবেন ? দেয়ালটা শাদা দেখছেন তো ? আপনি ভুল দেখছেন । বিজ্ঞানে বলে, সবগুলি রঙ মিশে শাদা হয়, বিজ্ঞান অবশ্য সত্যকে বিকৃত করে দেখে, আপনি যদি বেদের সপ্তম অধ্যায়টা পাঠ করেন, দেখবেন সেখানে লেখা আছে সমস্তই অস্থায়ী। সুতরাং রঙ মিশে শাদা হয়নি, রঙ গুলি অস্থায়ী বলে সাদা দেখায়-চোখের ভাল । এবার দেখতে পাচ্ছেন দেয়ালের রঙটা লাল ? এই নীল হয়ে গেল, এই আবার সবুজ হ’ল, দেখতে দেখতে হলদে হয়ে গেল-” তামাটে মুখ প্ৰায় কালো করিয়া জ্যোতিন্ময়কে ফিরিতে হইয়াছে। কিন্তু উপায় কি ? তবু তাকে চেষ্টা করিতে হয়, চাকরী তো বজায় ব্ৰাখিতে হইবে ? বন্ধুদের কাছে জ্যোতিন্ময় অনুচ্চারিত অভিযোগের জবাব দিবার মত সবিনয়ে বলে, “ব্যাপারটা কি জান ? সকলের হ’ল দলাদলি মাতামাতি নিয়ে কারবার, কৰ্ত্তার মতামত প্ৰচলিত মতামতের বিরোধী। তাছাড়া, কৰ্ত্তা বড়ই তেজঙ্গী আর স্বাধীনচেতা পুরুষ,-“এইজন্য কৰ্ত্তাকে অনেকে পছন্দ করে না ।” অপরাধ কার, সে নিজে কেন অপরাধী সাজিয়া থাকে, জ্যোতিন্ময় বুঝিতে পারে না। তবুও সত্যপ্রিয়কে যারা মহাপুরুষ বলিয়া স্বীকার করে না, সত্যপ্ৰিয়ের মতামত নিয়া হাসাহ।াসি করে নিজেদের মধ্যে, তাদের কাছে কেমন যেন ছোট মনে হয় নিজেকে । জ্যোতিন্ময়াকে সত্যপ্ৰিয়ের সব সময়েই প্ৰায় দরকার হয়। কেবল আপিসে কাজ করিয়াই তার রেহাই নাই, সকালে ও সন্ধ্যায় প্রায়ই বাগানবাড়ীতে ছুটিতে হয়, ছুটির দিনগুলিও অধিকাংশই বাগানবাড়ীতে কাটে । হয়তো ঘণ্টাখানেক সত্যপ্ৰিয় তার সঙ্গে কাজের কথা বলে, বাকী সময়টা অপেক্ষা করিয়া বসিয়া থাকিতে হয়। তবে অসময়ে খাওয়ার জন্য বাড়ীতে জ্যোতিন্ময়কে ছুটিতে হয় না, খাওয়াটা সত্যপ্ৰিয়ের ওখানেই হয়। মানুষজনকে খাওয়ানো সম্বন্ধে সত্যপ্ৰিয় বড়ই উদার। হয়তো সত্যপ্রিয়ের ধারণা আছে, মানুষকে দিয়া গুণ গাওয়ানোর একটা খুব সহজ উপায় মানুষকে ঠাসিয়া নুন খাওয়ানো । RtY