পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৩১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরতলী অপরাজিতার কথাটা যশোদা প্ৰথমে জ্যোতিৰ্ম্ময়ের মন রাখিয়া মোলায়েম করিয়াই বলিবার চেষ্টা করে। কিন্তু জ্যোতিৰ্ম্মষ যেন শুনিয়াও শোনে না, কথাটার গুরুত্ব উপলব্ধি করিতে পারিয়াছে মনে হয় না । তখন যশোদা ভদ্রতা ভুলিয়া যায়, এমন সব কথাই শোনায় যে মনে মনে জ্যোতিৰ্ম্ময় রাগিয়া যায়, ভাবে যে কড়া সুরে বলিয়া দিবে। কিনা, তার স্ত্রীর ভাবনা যশোদাকে ভাবিতে হইবে না। কিন্তু ভদ্রলোক বলিয়া কিছুই সে বলিতে পারে না, চুপচাপ শুনিয়া যায়, মাঝে মাঝে ভয়, বিস্ময় ও দুর্ভাবনা জানাইতে বরং এই ধরণের মন্তব্যই করে ঃ ‘সত্যি বলছ ? এসব তো জানতাম না। আমি ! ইস, বড় অন্যায় হয়ে গিয়েছে তো !? ‘বাপের বাড়ী পাঠিয়ে দিন না ?” ‘বাপের বাড়ী ? তাই তো, বাপের বাড়ী পাঠিয়ে দিলেই তো হয় ! কথাটা তো একেবারেই খেয়াল হয়নি। আমার !’ বলিতে বলিতে জ্যোতিৰ্ম্ময় অন্যমনস্ক হইয়া যাওয়ার উপক্রম করে, অন্যমনস্ক হইয়া যাওয়ার উপক্ৰম করিতে করিতে বলে, “তাই দেবী। চক্কোত্তি মশায়ের মেয়ের বিয়ে চুকে গেলেই পাঠিয়ে দেব।” যশোদা উঠিয়া আসিবে, হঠাৎ জ্যোতিৰ্ম্ময় জিজ্ঞাসা করিল, “আচ্ছা চাদের মা, তোমাকেই একটা কথা জিজ্ঞাসা করি । চক্কোত্তি মশায়কে তো তুমি চেনে, ...তোমার কি মনে হয় সামান্য কটা টাকার জন্য উনি ছোটলোকোমি করতে °न ?° যশোদা সঙ্গে সঙ্গে বলিল, “তা পারেন ।” “পারেন ?’-জ্যোতিৰ্ম্ময় যেন স্তন্তিত হইয়া গেল । সত্যপ্ৰিয়ের মেয়ের বিবাহের তিনদিন আগে সত্যপ্ৰিয় মিলে ধৰ্ম্মঘট আৱিস্ত হইয়া গেল। কেবল ধৰ্ম্মঘট নয়, একটু মারামারিও হইয়া গেল। এবারও মারামারির সুত্রপাত হইল মতির জন্য। বড় রহস্যময় মারামারি । পরদিন ধৰ্ম্মঘট হইবে, কাজ করিতে হইবে না ভাবিয়া আগের দিন রাত্রে মতি মিলের প্রায় এক মাইল দূরে তার একটি চেনা স্ত্রীলোকের ঘরে নিশ্চিন্ত মনে মদ খাইতে গিয়াছিল। একাই গিয়াছিল, কালোকে বিবাহ করিবার পর সুধীর আর মতির সঙ্গে হল্লা করিতে বাহির হয় না। কারা যেন একটু রাগ ছিল মতির উপৰে, vo's