পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৩৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাণিক গ্ৰন্থাবলী ছুটি সম্পর্কে জ্যোতিস্ময়ের বিশেষ আগ্ৰহ দেখা গেল না। এসব বিষয়ে সত্যপ্ৰিয়ের ব্যবস্থা বড় জটিল। ছুটি চাহিলেই দেয়, সময় সময় দরকার মনে করিলে, যেমন আজ জ্যোতিস্ময়ের বেলা মনে করিয়াছে, না চাহিলেও নিজে হইতে যাচিয়া ছুটি দিতে চায়। কিন্তু ছুটি যে নেয় শেষ পৰ্য্যন্ত তার হয় বিপদ । কাজ আর কাজের দায়িত্ব সত্যপ্রিয় ভাগ করিয়া দিয়াছে, যার যা করার কথা তাকে তা করিতেই হইবে, কাজ না করার পক্ষে কোন যুক্তি নাই, কোন কৈফিয়ৎ নাই। সে নিজে হইতে ছুটি নিতে বলিয়াছিল, ছুটিতে থাকার সময় মানুষ কাজ করিতে পারে না, এ যুক্তিটা খুব জোরালো সন্দেহ নাই, কিন্তু জোরালো যুক্তিটা শুনাইবার সুযোগ তো সত্যপ্রিয় কোনমতেই সৃষ্টি করিবে না । কাজ কেন হয় নাই সে কৈফিয়ৎ আজ পৰ্য্যন্ত সত্যপ্ৰিয় কারও কাজে স্পষ্ট ভাষায় দাবী করিয়াছে কি না সন্দেহ, কিন্তু রাগ যে সে করিয়াছে, এ ভাবে যে চলিবে না, কাজের ক্ষতির সঙ্গে যে চাকরীর ক্ষতির অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক, এই সব কি কৌশলে যেন বরাবর ভাষার চেয়েও স্পষ্ট করিয়া সকলকে বুঝাইয়া দিয়া আসিয়াছে। জ্যোতিৰ্ম্ময় তাই আমতা আমতা করিয়া বলিল, “আজ্ঞে, আপনার নতুন প্রোগ্রামটা চালু করা হচ্ছে, এ সময়-” সত্যপ্রিয় আবেগভর কণ্ঠে বলিল, “না, না, ওসব প্রোগ্রাম-ট্রোগ্রামের কথা নিয়ে আপনি আর এখন মাথা ঘামাবেন না জ্যোতিন্ময়বাবু।” এ সব কথার অর্থও জ্যোতিৰ্ম্ময় জানে। সত্যপ্ৰিয় সকলকেই এমনিভাবে দরদ জানায়, সকলের প্রতিই এমনি উদারতার পরিচয় দেয়। কিন্তু সত্য সত্যই যদি কোন মুর্থ এই দরদ আর উদারতার সুযোগ গ্ৰহণ করিয়া বসে, দু’দিন পরে সে আর কোনদিকে কুল দেখিতে পায় না। এ বিষয়ে সত্যপ্ৰিয়ের একটা থিয়োরী আছে। কৰ্ম্মচাৰীদেৱ সে এই সব কথা বলে, বন্ধু ও আত্মীয় হিসাবে, কৰ্ম্মচারী ও উপরওয়ালার সম্পর্কটা তো তাতে বাতিল হইয়া যায় না, মাসান্তে কৰ্ম্মচারী মাহিনী তো গ্ৰহণ করে, সুতরাং কাজ সম্পর্কে আত্মীয় বন্ধু হিসাবে সে যা বলে, কাজ সম্পর্কে সে কথাগুলি প্ৰয়োগ করা কি কৰ্ম্মচারীদের উচিত ? তার মত অবস্থার আর একজন মানুষও কি আছে সামান্য মাহিনাৱ কৰ্ম্মচারীর সঙ্গে যে এমন সহজভাবে মেলামেশা করে, বিপদে-আপদে সহানুভূতি জানায়, পরামর্শ দেয় ? এই মেলামেশার INSONS