পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৩৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরতলী ভেলকি আরম্ভ হইয়া গিয়াছে। “নিন্দে করে নাকি বেড়াচ্ছে তুমি আমার ?” সুধীর জবাব দিবার আগেই কালো তাড়াতাড়ি বলে, “না দিদি না, মিথ্যে লাগিয়েছে তোমার কাছে মানষে।” যশোদা চোখ পাকাইয়া বলে, “তুই চুপ কর ছুড়ি, তোকে বলিনি আমি। কেঁউ। কেঁউ করতিস দু’দিন আগে কুকুর বাচ্চার মত, বড় মুখ ফুটেছে, না ?” সুধীর ক্ষুব্ধ হইয়া বলে, “গাল দিও না চাদের মা ।” কতবার কত কারণে রাগ করিয়াছে যশোদা, এমন কালো মেঘের ছায়া কে কবে। তার মুখে ঘনাইয়া আসিতে দেখিয়াছে ?-“গাল দেব না ?-গাল দিতে বারণ কবুলে ? কথা কইলে যদি না সয়, যাও না চলে এখান থেকে ? কে মাথার দিব্যি দিয়েছে থাকতে ? পাওনা গণ্ডা মিটিয়ে দিয়ে গট, গট করে বেরিয়ে যাও দু’জনে ৷” বলিয়া যশোদা নিজেই গট গট করিয়া বাহির হইয়া যায়, পরীক্ষণে ফিরিয়া আসিয়া অপেক্ষাকৃত শান্ত কণ্ঠে বলে, “আজ পৰ্যন্ত একটি পয়সা দিলে না, এমনি করে তো দেন শোধ হবে না। সুধীর। আজকে ভাড়া চুকিয়ে দিও, ওমাসের আর পাঁচটি টাকা দিও দেনার জন্যে । আচ্ছা, পাঁচটা না পাৱ, डिन किई ७ि ? তারপর যশোদার রাগটা কমিবার সময় দিয়া রাত্রে কালোকে সুধীর তার কাছে কঁাদাকাটা করিতে পাঠাইয়া দেয়। সুধীর নয়, অনেকেই তার নিন্দা করিতেছে। এ খবরটা আবিষ্কার করিয়া যশোদার রাগটা কমিয়া আসায় কালোকে সে বলিয়া দেয় যে, আচ্ছা যা, মাইনে পেলে দিতে বলিস। এতদিন ধনঞ্জয়কে যশোদা ঘরে ভাত দিয়া আসিয়াছে, আজ বাহিরে আসিয়া সকলের সঙ্গে বসিয়া খাইবার ডাক পড়িল । 6উঠতে পারি না যে চাদের মা ? “খুব পারবে। চেষ্টাই করে দ্যাখো পার। কিনা।” ‘বড় লাগে চাদের মা ।” ‘পেরথম পৌরথম লাগবে না ? তাই বলে শুয়ে বসে দিন কাটালে চলবে নাকি, অভ্যাস করতে হবে না চলা ফেরার ?” vet