পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৩৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शांकि यंहांबत्रौ “উঠলে যে মাথা ঘোরায় চাদের মা ? ? “পেরথম পেরথম মাথা একটু ঘোরায়।” আজ যশোদার প্রথম খেয়াল হয় ধনঞ্জয় সত্য সত্যই বড় বেশী আহিলাদে হইয়া পড়িয়াছে, আদুরে ছেলের মত তার ঘেনঘেনানির অন্ত নাই। নিজের দূরদৃষ্টের কথা ছাড়া মুখে তার কথা শোনা যায় না, পা কাটা যাওয়ায় যন্ত্রণায় সে যত না কাতরাইয়াছিল এখন পায়ের ঘা শুকাইয়া আসিবার পর নিজের পোড়া কপালের নিন্দ করিয়া সে যেন তার চেয়ে বেশী কাতরায় । তার কথা বলাাৱ ভঙ্গিতে যেন ভিক্ষুকের সকরুণ আবেদন-নিবেদনের ধ্বনি শোনা যায়। এত যে আরামে যশোদা তাকে রাখিয়াছে, এত সেবা যত্ন করিতেছে প্ৰাণপাত করিয়া, কাছে বসিয়া ঘণ্টার পর ঘণ্টা তার একঘেয়ে নালিশ শুনিয়াছে আর আশা ও ভরসার , কথা শুনাইয়াছে, কিছুতেই ধনঞ্জয়ের তৃপ্তি হয় নাই, সহানুভূতির উগ্র পিপাসা কমে নাই। নিজের দুঃখের কথা বলিতে বলিতে সে অহোরাত্ৰি কঁাদিতে চায়, সেই সঙ্গে কাদাইতে চায় পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে । যশোদার কাছে তার যে কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত এ কথাটিও সে যেন ধীরে ধীরে ভুলিয়া গিয়াছে, যশোদার কাছে। এ সব যেন তার পাওনা ছিল। পা কটিয়া পঙ্গু হওয়ার জন্য তার এই দাবী জন্মিয়াছে। ধনঞ্জয় মুখ ভার করিয়া পায়ে কাঠের পা’টি আঁটিতে যায়, যশোদা বলে, “শুয়ে থেকে থেকে মাথাও কি খারাপ হয়ে গেছে তোমার ? এখান থেকে ওখানে গিয়ে খেতে বসবে, ওটা আঁটিছ যে ?? ধনঞ্জয় কঁাদ কঁাদ হইয়া বলে, “আর পারি না চাদের মা, সত্যি বলছি আর পারি না। আমি। আমি কেন মরলাম না চাদের মা ?” “হয়েছে, এসো এবার।’-নিব্বিকারভাবে এই কথা বলিয়া যশোদা আরো বেশী নিবিকারভাবে চলিয়া যায়। আর প্রশ্রয় দেওয়া হইবে না মানুষটাকে, এবার হইতে একটু শক্ত হইতে হইবে। পরদিন সকালে কাশীবাবু আসিয়া হাজির ৷-“কেমন আজ, চাঁদের মা ?” রাস্তায় ঘষিয়া মুখের যেখানে যেখানে চামড়া তুলিয়া দিয়াছিল যশোদা, সেই যায়গাগুলি এখনও সাদাটে হইয়া আছে। মুখখানা কিন্তু হাসি হাসি । ve