পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৩৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাণিক গ্ৰন্থাবলী কিছু রোমাঞ্চকর সম্ভাবনা আবিষ্কার করিতেছিল, কুমুদিনীর বাড়ীতে তাকে রাত্রে থাকিতে হইবে শুনিয়া সে মুষড়াইয়া গেল । সন্ধ্যার পর রাজেন আসিল। লরীতে চাপাইয়া ব্রাতারাতি মালপত্র ফিরাইয়া আনিবার অনুরোধে সে একটু হাসিল। “রাত্তিরে হাঙ্গামা করবার দরকার কি চাদের-মা ? আমি গিয়ে রাত্তিরটা থাকছি। সেখানে, ভোর ভোর মালপত্র নিয়ে বেরিয়ে পড়ব ?” ... " ‘কেন, সেখানে রাত কাটাবার তোমার দরকার ? তারনাম সিংকে বলোগে? আমার নাম করে” গাড়ী আর লোকজন নিয়ে গিয়ে সেই সব ব্যবস্থা बहब' দেবে, তুমি শুধু সঙ্গে থাকবে। সকালে ওর গাড়ী পাওয়া যাবে না ।” “কি বকশিস দেবে আমাকে ?” “রাত্তিরে অামায় পাহারা দিও।” রাজেন হাসিমুখে চলিয়া গেল। চিরদিন হাসিমুখেই রাজেন তার কাজ করিয়া দেয়,-কুমুদিনীকে ফাকি দিয়া। যশোদার সঙ্গে রাজেন বেশী মেলামেশা করিবে কুমুদিনী এটা পছন্দ করে না, দু’জনকে কথা বলিতে দেখিলে সে রাগিয়া আগুন হইয়া যায়, দু’তিন দিনের জন্য যশোদাকে একেবারে ত্যাগ করে। তারপর নিজেই আবার ভাব করিতে আসে। তীক্ষ কথা আদান-প্ৰদানের ভাব । দিনান্তে একবার যশোদার কাছে না আসিলে আর খানিকক্ষণ ঝগড়া করিয়া না গেলে কুমুদিনীর ভাল লাগে না, সারারাত মেজাজ তার এমন গরম হইয়া থাকে যে রাজেনের দুর্ভোগের সীমা থাকে না । রাজেন বাহির হইয়া যাওয়া মাত্র ধনঞ্জয় ফোস করিয়া উঠিল, “ওকে থাকুতে বললে যে তোমার কাছে ?” লণ্ঠনের আলোয় ধনঞ্জয়ের মুখ দেখিয়া যশোদা রাগ করার বদলে শান্তভাবেই বলিল, “মাথা খারাপ না কি তোমার ? তামাসা বোঝা না ?” ধনঞ্জয় অবুঝ শিশুর মত আব্দার করিয়া বলিল, “ওরকম তামাসা আর কোরোনা, বুঝলে ? বড় খারাপ লাগে শুনলে।” যশোদা কথা বলিল না । ধনঞ্জয়ের কথা শুনিয়া তারও খারাপ লাগিতেছিল। (eግ8