পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী.pdf/৪১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

भाविक यहांवली কয়েকবার রাজেনের মুখের দিকে চাহিয়াছিল, কিন্তু লোকটি বিদায় হওয়ার আগে তার কাছে একটি কথাও শুনা গেল না। ‘আসছি’ বিলিয়া লোকটির সঙ্গে উঠিয়া গিয়া রাজেন ফিরিয়া আসিল । “কেমন লাগিল লোকটিকে চাদের-মা ?” “তা যেমনি লাগুক, আগে বলত শুনি মানুষটা কে ?” “খুব নাম-করা লোক গো-বিধুবাবু।” বিধুবাবুর নাম যশোদাও শুনিয়াছে, শ্রমিক নেতা হিসাবে লোকটি সত্যই এতখানি বিখ্যাত যে এভাবে বাড়ী আসিয়া যশোদার সঙ্গে আলাপ করিয়া যাওয়া সত্যই বিস্ময়ের ব্যাপাৱ ! “বিধুবাবু! বিধুবাবু আমার সঙ্গে আলাপ করতে এলেন কেন ?? রাজেনের চেয়ে সে-কথা বিধুবাবুই যশোদাকে ভাল করিয়া বুঝাইয়া বলিল, দিন তিনেক পরে। আবার তেমনিভাবে অসময়ে আসিয়া আলগোছে একটি মোড়াতে বসিয়া বলিল, “তাহ’লে পশুর সভাতে যাচ্ছি। তো দিদি ?” আগের দিন বিধুবাবু তাকে ‘তুমি’ও বলে নাই, দিদিও বলে নাই। যশোদা আশ্চৰ্য্য হইয়া বলিল, “কিসের সভা ? বিধুবাবু আরও বেশী আশ্চৰ্য্য হইয়া বলিল, “কোন রাজেন বলেনি?’ “কই, না ?” সঙ্গে সঙ্গে বিধুবাবুর হাসির শব্দে যশোদার বাড়ী সরগরম হইয়া উঠিল - ‘তা রাজেন ওই রকম মানুষই বটে ! আমি কে তাতো বলেছে, না তাও বলে নি ?” “প্ৰথমে বলে নি, আপনি যাওয়ার পর বলেছে ;’ যশোদারও হাসি আসিতেছিল। প্রথমদিন বিধুবাবুর। তবে ধারণা ছিল যশোদা তার নাম-ধাম আর দেখা করিতে আসার উদ্দেশ্য সমস্তই জানে, তাই পরিচয়ও দেয় নাই, কাজের কথাও বলে নাই। লোকটিকে যশোদার ভাল লাগিতে থাকে। এরকম লোকই ভাল, যারা অকারণে প্ৰথম পরিচয়ের দিন অনাবশ্যক ব্যগ্রতার সঙ্গে বড়-বড় কথা বলিতে আৱম্ভ করিয়া আরও বড় প্ৰয়োজন যে চেনা হওয়া, তাতে বাধা সৃষ্টি করিয়া বসে না । দু’দিন পরে শ্রমিকদের একটি সভা হইবে, সাধারণ সভা। প্ৰথমে কৰ্ম্মীদের সভা, তারপর শ্রমিকদের। বিধুবাবু যশোদাকে নিমন্ত্ৰণ করিয়া নিয়া যাইতে চায়,